ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, একটি আবাসিক বাড়ির পাশেই বিকট শব্দে এই বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের ফলে ধসে পড়ে ভবনটির ছাদ। ধারণা করা হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ বারুদ মজুদ থাকায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ বলছে, বেআইনিভাবে কারখানাটিতে বাজি তৈরির পাশাপাশি হাত বোমাও তৈরি করা হতো।
যে কারখানাটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে- সেটির ছাদ সম্পূর্ণ উড়ে গেছে।
এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এগরা বিধায়ক তরুণ মাইতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বেআইনি পটকা তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানা গেছে। কতজন মারা গেছে তা এখনি সঠিকভাবে বলা সম্ভব না।
এদিকে বিস্ফোরণের পর এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপির বেঙ্গল ইউনিট।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন এবং অবিলম্বে এই বিষয়ে রাষ্ট্ৰীয় অনুসন্ধান সংস্থা (এনআইএ) তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
সুকান্ত মজুমদার চিঠিতে লেখেন, এনআইএ পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ব্লকে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি খুঁজে পাবে, যাতে এই বিধ্বংসী ঘটনার পেছনের সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
তিনি আরো লেখেন, এলাকায় আরো অনেক অবৈধ বাজি তৈরির কারখানা রয়েছে। এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডে এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এনআইএ’র তদন্ত নিয়ে তার কোনো আপত্তি নেই।
তবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি যে বিজেপি নেতাদের একটা ‘ফর্মুলা’, সে কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এগরা বিস্ফোরণ নিয়ে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় তদন্ত শুরু করেছে। সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তারপরেও এনআইএ তদন্ত করলে তার সমস্যা নেই।
তবে এজন্য শর্ত জুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায়, ‘এনআইএ তদন্ত করলেও যেন আসল দোষী ধরা পড়ে। কী করে কারখানার মালিক জামিন পেলো, কী করে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা নতুন করে খুললো, দেখতে হবে। এ বিষয়ে দ্বিমতের ব্যাপার নেই।’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই বাজি কারখানার মালিককে ২০২২ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তিনি আদালত থেকে জামিন পান। কীভাবে জামিন পেলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা।