পাঁচ মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরতে পারেন তিনি।

গত ৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।

এর আগে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আগামীকাল বিকেলের দিকে ম্যাডামকে বাসায় নেওয়া হতে পারে।

বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করলে ম্যাডামকে বাসায় আনা যেতে পারে। বাসায় আনার পরও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী ম্যাডামের চিকিৎসা অব্যাহত রাখা হবে।

২০২৩ সালের ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। আবার সন্ধ্যায় অবস্থার উন্নতি হলে তাকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নেতৃত্বে ২৬ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের যকৃতে ‘ট্র্যান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপেটিক পোরটোসিসটেমিক শান্ট (টিপস)’ প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচার করা হয়। টিপস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার দুটি রক্তনালীর মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরি করেন চিকিৎসকরা।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চিকিৎসকরা হলেন- ডা. হামিদ আহমেদ আব্দুর রব, ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ও ডা. জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটন। তারা তিনজনই বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের চিকিৎসক।

বিএনপির দাবি ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানান জটিলতা রয়েছে তার। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্‌যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরোনো হয়।

খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।