গত মে মাসে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যেখানে ঘরের মাঠে টাইগারদের বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতেছিল ম্যান ইন গ্রিনরা। এবার ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত এক জয়ে লিড নিয়েছিল টাইগাররা। এবার দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকরা জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল।

তিন ম্যাচে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আজ পাকিস্তানকে ৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগাররা। সঙ্গে গড়েছে ইতিহাসও; প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সংস্করণে সিরিজ জিতেছে স্বাগতিক এই দল।

মঙ্গলবাল (২২ জুলাই) আগে ব্যাট করে পাকিস্তানকে ১৩৪ রানের সহজ লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে ১২৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে ৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই রান হন সাইম। ৪ বলে ১ রান করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় ওভারে ডাক আউট হন মোহাম্মদ হারিস। এরপর দ্বিতীয় ওভারে আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। তার বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। এরপর চতুর্থ ওভারে ফের আঘাত হানেন শরিফুল। এবার তার বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসবন্দী হয়ে আউট হন ফখর জামান।

এরপর ৫ম ওভারেই ম্যাচে প্রথমবার বোলিংয়ে এসেই পাকিস্তানের মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন তানজিম সাকিব। সাকিবের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ৬ বলে খেলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় হাসান নওয়াজকে।

পরেই বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে বিদায় নিতে হয় মোহাম্মদ নওয়াজকে। তিনি কট বিহাইন্ড হয়েই আউট হন। এদিকে দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে অল সংগ্রহেই অল আউট হওয়ার শঙ্কায় ছিল সালমান আঘার দলে। দলীয় ৩০ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ম্যান গ্রিনরা। তবে প্রতিরোধ গড়েন আব্বাস আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ। এ দুজন মিলে অষ্টম উইকেটে গড়েন ৪১ রানের জুটি। তবে জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। তার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন আফ্রিদি।

তবে আব্বাস আফ্রিদিকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন ফাহিম আশরাফ। দুজনের ব্যাটে ভর করে এগোতে থাকে পাকিস্তান। কিন্তু ১৭তম ওভারের প্রথম বলে আব্বাসকে বোল্ড করে টাইগারদের ব্রেক থ্রু এনে দেন শরিফুল ইসলাম। ১৩ বলে ১৯ রানের এই পাক পেসার। অপর প্রান্ত থেকে লড়াই করতে থাকেন ফাহিম।

তাকে যোগ্য দিয়ে আশা জাগান আহমেদ দানিয়েল। ১৯তম ওভারে রিশাদের বলে বলে বাউন্ডারি মেরে টাইগারদের চমকে দিয়েছিলেন ফাহিম। কিন্তু ওভারের শেষ বলে বোল্ড আউট হন তিনি। ৩২ বলে ৫১ রানে আউট হন এই পাক অলরাউন্ডার।

শেষ ওভারে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ১৩ রান। প্রথম বলে চার মেরে আশা জাগিয়েছিলে  দানিয়েল। পরের বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ আউট হেলে ১২৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে ৮৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩ রান করে দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার নাঈম শেখ।

নাঈমের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক। ৯ বলে  রান করে ফেরেন তিনি। এরপর পিচে এসেই রান আউটে কাটা পড়েন তাওহীদ হৃদয়। এতে ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

তবে লড়াই করার চেষ্টা করছিলেন আগের ম্যাচের নায়ক পারভেজ ইমন। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে পঞ্চম বলে পাকিস্তানকে ক্যাচ উপহার দিয়ে বসেন এই ব্যাটার। এতে ১৪ বলে ১৩ রানে ফেরেন তিনি। এতে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৯ রান তোলে টাইগাররা।

এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করছেন শেখ মাহেদী ও নাঈম শেখ। দুজনের ব্যাটে ভর করে ১০ ওভারে ফিফটি তুলে নেয় টাইগাররা। ৪৯ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। কিন্তু এরপর ক্যাচ আউট হন মাহেদী। ২৫ বলে ৩৩ রান করেন তিনি।

৪ বলে ১ রান করে তাকে সঙ্গ দেন শামীম পাটোয়ারী। এরপর ৪ বলে ৭ রান করে তানজিম সাকিব ও ৪ বলে ৮ রান করে আউট হন রিশাদ হোসেন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করছিলেন জাকের।

নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে ৪৬ বলে ফিফটি তুলে নেন জাকের। তবে ইনিংসে শেষ বলে ছক্কা হাকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন তিনি। তার ৪৮ বলে ৫ রানে ভর করে ১৩৩ রানের লড়াকু পুঁজি পায় টাইগাররা।

পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন সালমান মির্জা, আহমেদ দানিয়াল ও আব্বাস আফ্রিদি। এ ছাড়াও ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ নেন একটি করে উইকেট।