পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয় তবে তাঁর দেশ ভেঙে তিন ভাগ হয়ে যাবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বুধবার দেশটির একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সম্প্রতি পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে তাঁর দেশ আত্মহত্যার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে। তাঁর দেশ খেলাপি হওয়ার দিকে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালককে ইমরান খান বলেন, ‘যদি এস্টাবলিশমেন্ট (পাকিস্তান সেনাবাহিনী) সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে আমি আপনাকে লিখে দিতে পারি, তারা ধ্বংস হবে (পাকিস্তান ও এস্টাবলিশমেন্ট)। সশস্ত্র বাহিনীই প্রথমে ধ্বংস হবে।’
সতর্ক করে তিনি বলেন, দেশ ধ্বংস হলে সেটি খেলাপি হবে। তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাকিস্তানকে পরমাণুনিরস্ত্রীকরণের কথা বলবে। ঠিক যেমনটা গত শতকের নব্বইয়ের দশকে ইউক্রেন করেছিল।
ইমরান খান বলেন, ভারতীয় চিন্তনপ্রতিষ্ঠানগুলো বেলুচিস্তানকে আলাদা করার কথা বলছে। তাদের তেমন পরিকল্পনা আছে। এ জন্যই তিনি চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। তবে তিনি ঠিক কাকে চাপ দিচ্ছেন, তা উল্লেখ করেননি।
পিটিআই-প্রধান বলেন, সব উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করবে পাকিস্তানের বর্তমান জোট সরকার। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ইসরায়েলি জোটকে খুশি রাখতে সব সময়ই কাজ করে এসেছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি।
ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা দেশকে শক্তিশালী করা নয়। তাঁকে যখন ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তখন তাঁর উদ্যাপন ভারতে এমনভাবে হয়েছে, যেন নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একজন ভারতীয়।
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তিনি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন বলে তাঁকে ভারত পছন্দ করেনি।
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে ফের ইসলামাবাদ অভিমুখে ‘মার্চ’ করবেন বলেও জানান পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান। তবে তিনি বলেন, তাঁর এই প্রতিবাদী কর্মসূচি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
ইদকে ইমরান খানের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে পিএমএল-এনের নেতা তালাল চৌধুরী বলেছেন, মানসিকভাবে অসুস্থ একজন ব্যক্তিই কেবল এমন কথা বলতে পারেন।
তালাল চৌধুরী বলেন, ‘ইমরান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়। আজাদি মার্চে আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। তাই আমি মনে করি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁর বিরুদ্ধে নিজেদের ভূমিকা পালন করবে।’