প্রবল বর্ষণে বান্দরবান সদরে পাহাড়ধসে মা-মেয়ে নিহত হয়েছেন। ইতোমধ্যে মাতামুহুরী ও সাঙ্গু নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে বান্দরবানের লামা, কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে চন্দনাইশ সড়কে জলাবদ্ধাতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে খাগড়াছড়িতে একাধিক স্থানে আকস্মিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে, প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বান্দরবান সদরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার অজিত দাস জানান, সোমবার দুপুরে পাহাড়ধসে বান্দরবান সদরে মা-মেয়ে নিহত হয়েছেন। তারা পৌরসভার কালাঘাটা বোদার পাড় এলাকার বাসি শীলের স্ত্রী ও মেয়ে। এদের মধ্যে বাসি দাসের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, মাতামুহুরী নদীর পানিতে চৈক্ষ্যং ইউপি পরিষদ এলাকার সড়ক প্লাবিত হয়ে আলীকদমে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাঙ্গু নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরে নদীর তীরবর্তী, অফিসার্স ক্লাব, ইসলামপুর, আর্মিপাড়া এলাকাসহ নিচু এলাকাসমূহে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের কারণে পর্যটকবাহী গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে চান্দনাইশ এলাকার সড়কে পানিতে টইটুম্বুর দেখা যায়। এতে পানির নিচে রয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক। ইতোমধ্যে সড়ক দিয়ে যান চলাচল অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে চকরিয়া উপজেলার কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, পূর্ব বড় ভেওলা, বিএমচর, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, পশ্চিম বড় ভেওলা, সাহারবিল, চিরিঙ্গা, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী এবং পেকুয়া সদর, রাজাখালী, উজানটিয়া এবং চকরিয়া পৌরসভার সিংহভাগ এলাকা বর্তমানে ৮ থেকে ১০ ফুট বানের পানির নিচে রয়েছে। এসব এলাকার প্রায় তিন শতাধিক গ্রামের অন্তত সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরে ঘরে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এসব পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের কারণে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে।

টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে খাগড়াছড়িতে একাধিক স্থানে আকস্মিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে, প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনদের সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে পৌর শহরের শালবন, কলাবাগান, সবুজবাগ এলাকায় পাহাড় ধসে ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে চেঙ্গী নদীর পানির বাড়ায় শহরের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি প্রায় তিন হাজার পরিবার। এ ছাড়া মানিকছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধসে যাওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি।