বাংলাদেশ পুলিশ বীরত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলেই দুর্বার গতিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, ‘২০১৪-১৫ আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষকে হত্যা করার দৃশ্য আপনারা দেখেছেন। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার দৃশ্য দেখেছেন। তখন পুলিশ কাজ করেছে। অনেক পুলিশ সদস্য শাহাদাত বরণ করেছেন সব আন্দোলন ও সংকটে পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতা ও বীরত্বের সঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ কারণেই আজ বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।’

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৪৮ বছরে পদার্পণ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আহ্বান করেছিলেন বাংলাদেশের পুলিশকে জনগণের পুলিশ হওয়ার জন্য। আজ পুলিশ সে জায়গাটিতে এসেছে। জনগণের আস্থার জায়গা, বিশ্বাসের জায়গাটাতে পুলিশ আসছে। পুলিশ আজ জনগণের বন্ধু। সব আন্দোলন ও সংকটে পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতা ও বীরত্বের সঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ কারণেই আজ বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টাতেই ডিএমপির যাত্রা শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আজ ডিএমপি ৪৮ বছরে পদার্পণ করেছে। ৫০টি থানাসহ ডিএমপিতে আরও ইউনিট রয়েছে, যারা সবসময় কাজ করে যাচ্ছে।

যখন আমরা দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম জঙ্গি উত্থানের কারণে, হোমগ্রোন টেরোরিস্ট ও আন্তর্জাতিক টেরোরিস্টের যোগসাজশে জঙ্গি যে প্রচেষ্টা হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ডিএমপিতে সিটিটিটিসি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জঙ্গি দমন করেছে, বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ২০১৪-১৫ অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষকে হত্যার দৃশ্য আপনারা দেখেছিলেন। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার দৃশ্য দেখেছেন। তখন পুলিশ কাজ করেছে, অনেক পুলিশ সদস্য শাহাদাত বরণ করেছেন। প্রত্যেকটা আন্দোলন প্রত্যেকটা সংকটে পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বীরত্বের সঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলেই আজ বাংলাদেশের দুর্বার অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এর পেছনের শক্তিটা হলো শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছি। পুলিশ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ঢাকায় দুই কোটি মানুষের বাস, এখানে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা সহজ কথা নয়। কিন্তু ডিএমপি ঢাকাবাসীকে সেই নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে।

এ অনুষ্ঠানে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বর্তমানে ডিএমপির ৫০টি থানায় ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। নগরবাসীর সঙ্গে ডিএমপির সৌহার্দ বৃদ্ধি করে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাই হবে মূল লক্ষ্য।

সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বর্তমানে ডিএমপির সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ভবিষ্যতে জঙ্গি, সন্ত্রাস ও নাশকতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালালে জনগণের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, সমসাময়িক অপরাধীদের ধরন ও গতি প্রকৃতি বিবেচনা করে বিশেষত সাইবার অপরাধ দমনে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে যুগোপযোগী পুলিশি সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

এর আগে দুপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৮তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষে একটি শোভাযাত্রা করেন ডিএমপির সদস্যরা।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বেলা ৩টায় বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালির উদ্বোধন করেন। পরে শোভাযাত্রাটি মিন্টোরোডের ডিএমপি হেড কোয়ার্টার থেকে শুরু হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে গিয়ে শেষ হয়।

এতে সুসজ্জিত অশ্বারোহী, ব্যান্ড দল, ডগ স্কোয়াড, সোয়াট, বোম ডিসপোজালসহ অন্যান্য ইউনিটের সদস্যরা অংশ নেন। ‘শান্তি শপথে বলীয়ান’ এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ১৯৭৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মাত্র ১২টি থানা ও সাড়ে ছয় হাজার জনবল নিয়ে গঠিত হয় ডিএমপি।