সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান আহমেদের (৩৫) মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) হাসান উদ্দিনের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে এস আই হাসানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আব্দুল আলিম ভুইয়া জুয়েল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

দেড় বছর আগে পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। গত ১৮ এপ্রিল সিলেটে পুলিশের হেফাজতে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহিমের আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়।

সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওশাদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, রায়হান হত্যা মামলার অভিযুক্ত সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য ও এক পলাতক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়।

ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বছরের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), ফাঁড়ির টুআইসি পদে থাকা সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)। অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাবন্দি। আসামি আবদুল্লাহ আল নোমান পলাতক।

 

 

 

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর দিবাগত রাতে রায়হানকে ধরে নিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন সকালে রায়হানকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।