এই প্রথম দেশে নির্মিত হলো বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। ‘বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেইনার’ নামক এই বিমানটি বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহার করা হবে। রোববার তেজগাঁও বিমান বন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সমরাস্ত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বিমানটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেনার ‘বিবিটি’র নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন ও এ্যরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিভিন্ন ধাপে নানা প্রক্রিয়া সম্পর্কে পর্যালোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শুরু হয় বিমান নির্মাণের যাত্রা।
রোববার (২৪ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেইনার (বিবিটি) তৈরির যাত্রা শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বাংলাদেশেও বিমান তৈরি সম্ভব —এই স্বপ্ন ও ধারণা হতে শুরু হয় পথযাত্রা। বিভিন্ন ধাপে নানাবিধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে পর্যালোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শুরু হয় বিমান নির্মাণের যাত্রা। বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত মূলমন্ত্রে দীক্ষিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় নিজেদের চেষ্টায় নিজেদের কারিগরি প্রযুক্তিতে, নিজেদের প্রকৌশলী ও লোকবলের দ্বারা নির্মাণ করে বাংলাদেশের প্রথম উড়োজাহাজ বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেইনার-১ (বিবিটি-১)। এই বিমান ১৮০ কিমি গতিতে ১০,০০০ ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নে সক্ষম। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে বিমানটি প্রথম টেস্ট ফ্লাইট সম্পন্ন করে রচনা করে নতুন ইতিহাস।
অনুরূপভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রকৌশলীগণের বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানের প্রায়োগিক প্রক্রিয়ায় বিবিটি-২ (বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেইনার-২) বিমানের নির্মাণ ও প্রয়োজনীয়তার সম্ভাব্যতা যাচাই করার প্রক্রিয়াটি ডিসেম্বর ২০২১ এ শুরু হয়। বিবিটি -২ সুনির্দিষ্ট বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা পূরণের লক্ষ্যে ২৬ অক্টোবর ২০২৩-এ সফলভাবে প্রথম উড্ডয়ন সম্পন্ন করে।
উল্লেখ্য, লো উইং ডিজাইন বিমানটি পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য নিশ্চিত করে। প্রকৌশলীদের বুদ্ধিদীপ্ত প্রচেষ্টার ফলে বিবিটি-২ ফিউজলাজটি নির্মাণে কাঠের ব্যবহার করা হয়েছে আর সংযোগকারী অংশগুলো তৈরি করা হয়েছে এভিয়েশন গ্রেড স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে। এই সুচিন্তিত প্রকৌশলবিদ্যা বিমানের কাঠামোগত নির্ভরযোগ্যতা এবং ওজন দক্ষতা উভয়কেই নিশ্চিত করে। বিমানটি সর্বোচ্চ ৫০০ কেজি নিয়ে ২০,০০০ ফুট উচ্চতায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে উড্ডয়নে সক্ষম। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধু বেসিক ট্রেইনার-২ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উড্ডয়ন সক্ষমতাকে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্পের বাস্তবায়নে এই বিমানের নির্মাণ একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই অর্জন বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের পাতায় সূচনা করেছে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত এক নতুন অধ্যায়।