ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আলাদা ম্যাচে জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি এবং চেলসি। সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে মিডলসবোরোর কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায় ব্লুজরা। তবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ফিরতেই জয়ও পেয়েছে মাউরিসিও পচেত্তিনোর দল। স্টামফোর্ড ব্রিজে নিজ মাঠে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছে পশ্চিত লন্ডনের প্রতিবেশী ফুলহামকে।

প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে করা কোল পালমারের গোলটিই গড়ে দেয় চেলসি ও ফুলহাম ম্যাচের ভাগ্য। পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়িয়েছেন তিনি। ম্যানচেস্টার সিটি থেকে চেলসিতে পাড়ি জমানোর পর লিগে এটা নবম গোল পালমারের।  ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এ নিয়ে টানা তৃতীয় ম্যাচ জিতল চেলসি।

মিডলসবোরোর বিপক্ষে অনেক সুযোগ নষ্ট করেছিলেন পালমার। সেই তাঁর গোলেই এবার জয় নিয়ে ফিরল চেলসি। ফুলহামের বিপক্ষে জয়ের পর পালমার বলছিলেন,‘ অন্য সবার মতো অনেক সুযোগ নষ্ট করায় ওই ম্যাচের পর আমিও মর্মাহত ছিলাম। ওটা পেছনে ফেলে আমি গোলও করলাম।

এ জয়ে দুই ধাপ এগিয়ে আটে উঠে এসেছে চেলসি। মাউরিসিও পচেত্তিনোর দলের পেছনে পড়ে গেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নিউক্যাসল। এই দুই দলই অবশ্য ম্যাচ খেলেছে একটি কম। ২১ ম্যাচে চেলসির অর্জন ৩১ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পয়েন্টও তাদের সমান ৩১।

তবে গোল পার্থক্যে পিছিয়ে রেড ডেভিলরা। আর ২০ ম্যাচে নিউক্যাসলের পয়েন্ট ২৯।  অন্যদিকে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরে আছে ফুলহাম। ঘরের বাইরে লিগে এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ হারল ফুলহাম। ইএসিপিএন
এদিকে, সেন্ট জেমস পার্ক স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার সিটি ৩-২ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক নিউক্যাসেল ইউনাইটেডকে। চোট কাটিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফেরার ম্যাচে অসাধারণ খেলেছেন এই মিডফিল্ডার। বদলি নেমে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছেন। এরপর একদম শেষ সময়ে তিনিই বানিয়ে দিয়েছেন ববের গোল।

তবে ম্যাচের যোগ করা সময়ে ডে ব্রুইনের দারুণ ক্রসের পরও কাজ অনেকটুকুই বাকি ছিল। বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পথেই দারুণভাবে এক ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়েছেন বব। এরপর চকিতে কাটিয়েছেন আগুয়ান গোলকিপারকে। পাশে থাকা আরও এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে তিনি বল পাঠিয়েছেন জালে।

২০১৯ সালে সিটির একাডেমিতে নিয়ে আসা হয় ববকে। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয় গত সেপ্টেম্বরে। নিউ ক্যাসলের সঙ্গে ম্যাচ ছিল সিটির হয়ে তার সপ্তম ম্যাচ। তবে খুব বেশিক্ষণ খেলার সময় পাননি কখনোই। এই ম্যাচেও কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা তাকে মাঠে নামান ৮২তম মিনিটে। শেষ পর্যন্ত তিনিই দলকে জেতান প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবার জালের দেখা পেয়ে।

গোলের পর ববের উদযাপনেই ফুটে উঠছিল তার আনন্দের মাত্রা। ম্যাচ শেষে টিএনটি স্পোর্টসের সঙ্গে কথোপকথনে তা উঠে এলো ২০ বছর বয়সী ফুটবলারের কণ্ঠেও।

“অসাধারণ অনুভূতি… বেঞ্চ থেকে দেখছিলাম, খুবই উত্তেজনার ম্যাচ ছিল। ম্যানেজার আমাকে বললেন, ‘যাও, নেমে গোল করো।’ সৌভাগ্যবশত আমি তা করতে পেরেছি।”

“আমার আজীবনের স্বপ্ন এটি (প্রিমিয়ার লিগে গোল করা) এবং দুনিয়ার সেরা দলের হয়ে তা করতে পারা… এটা আসলে ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, এই জয় তাদের জন্য।”

কেভিন ডে ব্রুইনের জাদুকরি পারফরম্যান্স দেখতে পারা তো গুয়ার্দিওলার জন্য নতুন কিছু নয়। তবে ম্যানচেস্টার সিটি কোচ মুগ্ধ ববের গোলে।

“অস্কারের গোলটি অসাধারণ মূলত যেভাবে বলটি সে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, সেই কারণে। প্রাক-মৌসুমে তার পারফরম্যান্স দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমাদের দ্বিতীয় দল (‘বি’ দল) থেকে যতটুকু জেনেছি, তাতে সে বিশেষ এক প্রতিভা।”

“কেভিনের পায়ে যখন বল থাকে… সে তো বিশ্বে অনন্য, তবে অস্কারের ফিনিশিং ছিল দুর্দান্ত। তার জন্য আমি খুবই খুশি।”