ফরিদপুরে লোকাল বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে খাদে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সত জনে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন। এর আগে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টার দিকে সদর উপজেলার জোয়াইড় এলাকার জোবায়দা-করিম জুটমিল সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান জানান, এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী, চারজন পুরুষ এবং এক শিশু রয়েছে।

নিহতরা হলেন, ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের শেখরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা জোয়ার সরদার (৬৫), তার ছেলে ইমান সরদার (৩৫), নগরকান্দার কাঠিয়া বড়গ্রামের বাসিন্দা রাজীব খানের স্ত্রী দীপা খান (৩৪), ফরিদপুর সদরের চর চাঁদপুর গ্রামের বলরাম সরকারের স্ত্রী ভারতি সরকার (৪০), চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীটেক গ্রামের বাসিন্দা খালেক চৌধুরীর ছেলে আলম চৌধুরী (৪০), ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার বাসিন্দা লতিফ ব্যাপারির স্ত্রী ফজিরন নেসা এবং লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের জহিরউদ্দিনের ছেলে আজিবরউদ্দিন (৪৩)।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানান, মাদারীপুরের টেকেরহাট থেকে ছেড়ে আসা ফরিদপুরগামী হাইডেক্স নামের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায় বাসটি। এ সময় একটি বৈদ্যুতিক পিলার বাসের মধ্যে ঢুকেও যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজন মারা যায়। এ ঘটনায় আরও ১০-১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় বাসটি অন্য একটি যানবাহনকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, নিহত প্রত্যেককে প্রশাসনের উদ্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পরবর্তিতে বিআরটিএর মাধ্যমে এককালীন অনুদান দেওয়া হবে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করবে। পরে তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।