ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ শনিবার। দুপুর ২টায় আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের মহাসচিব কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শুক্রবার রাতে গণসমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরও উপস্থিত হয়েছেন।

এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে বিএনপি। আগের দিন (শুক্রবার) রাতেই সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছেন নেতাকর্মীরা। তবে পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।

তবে, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন সমাবেশস্থলে। ফরিদপুরসহ পার্শ্ববর্তী ৫ জেলার নেতাকর্মীরা এ সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। জনসভাস্থলে দেখো গেছে, সমাবেশে আগতদের ভিড়ে প্রায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সমাবেশস্থল। তারা সেখানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রদক্ষিণ করছেন সমাবেশের মাঠ ছাড়িয়ে আশেপাশের এলাকায়।

এদিকে, ফরিদপুরে বাস মালিক সমিতির ডাকা ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে বরিশালের পাঁচ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরগুনা ও পিরোজপুর রুটের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকামুখী যাত্রীদের বাড়তি চাপ বেড়েছে বরিশাল নদী বন্দরে।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, সমাবেশে যাতে বিএনপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে না পারে সেজন্য পরিকল্পিতভাবে সরকার ধর্মঘট ডাকিয়েছে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরীয়া স্বপন বলেন, বিগত বিএনপির সমাবেশগুলোতে আমরা এ নাটক দেখেছি। সরকারের প্ররোচনায় বাস মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকেছে। তবে কোনো ধর্মঘট ডেকে বিএনপির মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না। নেতাকর্মীরা যেভাবেই পারুক মহাসমাবেশে যোগ দেবে এবং সমাবেশকে সফল করবে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গণসমাবেশের সমন্বয়কারী শামা ওবায়েদ রিংকু বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘট সরাসরি ডাকুক কিংবা পরোক্ষভাবে ডাকুক গত পাঁচটি সমাবেশে আমাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমাদের সমাবেশের আগে ও সমাবেশের দিন তারা বাস বন্ধ করে দেবে। সব জায়গায় তা করেছে। জনগণের ভোগান্তি তাদের মাথায় নেই, তাদের চিন্তা বিএনপিকে বিপাকে ফেলানো। কিন্তু এতে কোনো কাজ হবে না। মানুষের আবেগ আটকে রাখা যায় না। সরকারের পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে। ওরা বাস চলতে দেবে না জেনেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ট্রলারে চড়ে, ভেলায় চড়ে এমনকি পায়ে হেঁটে সমাবেশে আসবে।’

প্রসঙ্গত, নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলের নেতা-কর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশের সব বিভাগে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশালের পর শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুরে গণসমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। এটি বিএনপির ষষ্ঠ বিভাগীয় গণসমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সব বিভাগে গণসমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথম কর্মসূচি পালন করে। এরপর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে। ২২ অক্টোবর খুলনায়। ২৯ অক্টোবর রংপুর, সর্বশেষ ৫ নভেম্বর বরিশালে গণসমাবেশ করে বিএনপি।

এরপর আজ ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপির তৃতীয় ধাপের কর্মসূচি শেষ হবে।