অবশেষে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য টুরিস্ট বা পর্যটন ভিসা চালু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দুই দেশের মধ্যকার ধারাবাহিক কূটনৈতিক যোগাযোগের ফলে এ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে প্রতিদিন বাংলাদেশিদের ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। তবে এটি সীমিত পরিসরে চালু করা হয়েছে।

রোববার (৪ মে) ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএই রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আল-হামুদি। এসময় সীমিত পরিসরে ভিসা চালুর কথা জানান তিনি।

রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সরকারের মধ্যে ধারাবাহিক কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০টি থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের জন্য গ্রুপ ভিসা প্রসেসিং দ্রুততর করা হয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও জনসম্পর্ককে আরও গভীর করবে।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউএই সরকারের সঙ্গে বিশেষ দূতের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রশংসা করেন। ভিসা সহজীকরণ থেকে বিনিয়োগ সহযোগিতা পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে অর্ধডজনের বেশি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত আল-হামুদি জানান, ঢাকায় ইউএই দূতাবাস প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা ইস্যু করছে। পাশাপাশি, ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের জন্য বাল্ক ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়া দ্রুততর করা হয়েছে, যা জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক বিনিময় বাড়িয়েছে।

একটি বড় অগ্রগতির অংশ হিসেবে ইউএই মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় দক্ষ কর্মসংস্থান ভিসার জন্য তাদের অনলাইন সিস্টেম পুনরায় চালু করেছে।

ফলে সম্প্রতি বিপণন ব্যবস্থাপক ও হোটেল কর্মীদের জন্য ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। এছাড়া, নিরাপত্তাকর্মীদের (সিকিউরিটি গার্ড) জন্য ৫০০টি ভিসা ইতোমধ্যে প্রদান করা হয়েছে এবং আরও ১০০০টি ভিসা অনুমোদিত হয়েছে, যা অল্প সময়ের মধ্যেই ইস্যু করা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, ইউএই ধীরে ধীরে আরও ভিসা বিধিনিষেধ শিথিল করবে। রাষ্ট্রদূত আরও আশ্বাস দেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মানবিক ও করুণাবোধ-ভিত্তিক মামলাগুলো বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ নমনীয়তা বজায় রাখা হবে।

বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এই অগ্রগতিকে স্বাগত জানান এবং রাষ্ট্রদূত আল-হামুদির উন্মুক্ততা ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং জানান, উভয়পক্ষ ইতোমধ্যে আলোচনার পরিসর ও কাঠামোতে সম্মত হয়েছে।

এ মাসের শেষের দিকে আরব আমিরাতের একটি উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রিসভা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে যাবে।