আবারও বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারে নিজের রেকর্ড ভেঙ্গেছে দক্ষিণ কোরিয়া। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ কোরিয়ার পরিসংখ্যান বিভাগ প্রকাশিত তথ্যমতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০২২ সালে শিশু জন্মের হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশে। ২০২১ যা ছিলো শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০২২ সালে সর্বনিম্ন জন্মহার ছিল দেশটির রাজধানী সিউলে। শহরটিতে জন্মহার শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

সবশেষ কয়েক বছর ধরেই জন্মহারে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া দেশের তালিকায় ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে, এবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে দেশটি। সর্বনিম্ন জন্মহারের তালিকায় এবার বিশ্বে প্রথম হয়েছে তারা।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে দুই লাখ ৪৯ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে। যা আগের বছর থেকে ১১ হাজার কম। ২০২১ সালে জন্ম নেয়া শিশুর সংখ্যা দুই লাখ ৬০ হাজার।

এদিকে, গত বছর দেশটিতে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা তিন লাখ ৭২ হাজার ৪০০ জন। তার আগের বছর মারা গিয়েছিল তিন লাখ ১৭ হাজার ৬৮০ জন।

২০১৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি নারীর বিপরীতে সন্তানের সংখ্যা একেরও নিচে নেমে চলে আসে। আর দুই বছর বাদে অর্থাৎ ২০২১ সালে দেশটির জনসংখ্যা প্রথমবারের মতো কমে যায়। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা অনুযায়ী, প্রতি নারীর বিপরীতে দুই দশমিক ১ শতাংশ সন্তান থাকলে দেশটির জনসংখ্যা সমান থাকবে, অর্থাৎ কমবে না।

নিয়মিতভাবে জন্মহার কমতে থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। শ্রমিক সংকট, করদাতার সংখ্যা কমে যাওয়া এবং বয়স্ক মানুষদের পেছনে খরচ বাড়ায় দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে। জন্মহার কমায় এ উদ্বেগ আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

দেশটিতে জন্মহার বাড়াতে সর্বশেষ ১৬ বছরে ২১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার খরচ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। তবে, এতেও কোনো সুফল পাননি তারা।

দেশটির অনেক পুরুষের মতে, তাদের বাবা-মা ও দাদা-দাদির মতো পরিবার রাখার বাধ্যবাধকতা অনুভব করে না তারা। তাদের এই পরিবার বিমুখতার কারণ হিসেবে চাকরির অনিশ্চয়তা, ব্যয়বহুল আবাসন, লিঙ্গ ও সামাজিক বৈষম্য এবং প্রতিযোগিতামূলক সমাজে শিশুদের লালন-পালনে অধিক খরচের কথা জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, দেশটির পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি নিয়ে অভিযোগ করেছেন নারীরা। সন্তান লালন-পালনে বৈষম্যের শিকার হন তারা। এমনকি, কাজ ছাড়তেও বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।