রংপুর সিটি করপোরেশনে (রসিক) আবারও মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১২টায় ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।

মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৮৩ ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া পেয়েছেন ২২ হাজার ৩০৬ ভোট।

এর আগে এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ শেষে হয়। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন এবং নারী ২ লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন।

নির্বাচনকে ঘিরে ছিল ছয় স্তুরের নিরাপত্তা বেষ্টনি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জনের এবং ঝুঁকিপূর্ণ ৮৬টি কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স মোতায়েন রাখা হয়।

এছাড়া নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়োগ করা হয় ৩৩ জন নির্বাহী হাকিম। তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৬ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। র‍্যাব-বিজিবির একাধিক টিম মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় নিয়োজিত ছিল। তারা ভোটের আগে ও পরে মোট পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবেন।

এই নির্বাচনে ২২৯ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ১ হাজার ৩৪৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পোলিং অফিসার ছিলেন দুই হাজার ৬৯৮ জন। মোট ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৬৩ জন। সর্বোপরি নির্বাচনে এবার ৬৫.৮৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা।

এবার রংপুর সিটিতে প্রথমবারের মতো ২২৯টি কেন্দ্রের সবগুলোতে ইভিএমে ভোট দেন ভোটাররা। শীতের কনকনে সকাল উপেক্ষা করেই ভোটাররা সকাল থেকে কেন্দ্রে উপস্থিত হন। তবে শীতের তীব্রতা কাটিয়ে বেলা বাড়ার সাথে কেন্দ্রগুলোতে বাড়তে থাকে ভোটার উপস্থিতি। কিন্তু ইভিএম স্লো হবার কারণে ভোটগ্রহণে ধীরগতি পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটাররা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। বিকেল সাড়ে চারটায় ভোটগ্রহণ শেষ হলেও কিছু কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসা ভোটাররা শেষ পযন্ত ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে অনেকেই ইভিএম বিড়ম্বনার শিকার হয়ে ভোট দিতে পারেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এবার রংপুর সিটিতে প্রথমবারের মতো ২২৯টি ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৪৯টি ভোটকক্ষে ইভিএমে ভোট হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র ও কক্ষ মিলে ১ হাজার ৮০৭ সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এরমধ্যে এবার তালিকায় ছিল ভোটার চার লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৬ জন, পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০৩ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার একজন।