চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে শনিবার সকাল পৌনে ১১টায় সরকারপ্রধান হেলিকপ্টারে করে পতেঙ্গায় নেভাল হেলিপ্যাডে পৌঁছান।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে। সকালে উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী টানেল দিয়ে যাবেন আনোয়ারা প্রান্তে। পরে কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন সরকার প্রধান।

এদিকে, ভোর থেকেই জনসমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছে সর্বস্তরের মানুষ। উদ্বোধনের পর আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য টানেলটি খুলে দেওয়া হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল। এটি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।  রোববার সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

কর্ণফুলীর টানেল শুধু চট্টগ্রাম শহরের দুই প্রান্তকে যুক্ত করবে না, হবে শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের যোগসূত্র। মাটির প্রায় ১৪০ ফুট গভীরে নির্মিত ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলটি গাড়িতে পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট। টানেলে দুটি টিউব রয়েছে। এই টিউবগুলো কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে ১০৫ ফুট গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে। গাড়ির জট যাতে না হয়, সে জন্য রয়েছে ২০টি টোল বুথ।

কর্ণফুলী নদীতে বিভক্ত চট্টগ্রাম শহরকে সাংহাইয়ের মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়তে টানেল নির্মাণের পরিকল্পনা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর টানেল নির্মাণে প্রকল্পটি তাঁর সরকারের অনুমোদন পায়। পরের বছরের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সাত বছর পর বাস্তবে রূপ নিয়েছে টানেল। স্বাধীনতার ৫২ বছরে টানেলযুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। আনন্দের এই ক্ষণ উদযাপনে বর্ণিল সাজে সেজেছে কর্ণফুলীর দুই তীর।

সেতু কর্তৃপক্ষের নির্মাণ করা টানেলে গাড়ি চলাচলের কারণে শুধু দূরত্বই কমবে না, বাঁচবে সময় ও খরচ। কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের দূরত্ব কমবে ৪০ কিলোমিটার। মহেশখালীতে চলমান ৭২টি প্রকল্পের সুফল সারাদেশ পাবে আরও কম সময়ে।