বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথ ও দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থীতা বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগ নেত্রীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে জনসভাস্থলে প্রবেশের সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত সিরাজ সিকদার (৫৮) বরিশালের হিজলা উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কোব্বাত সিকদারের ছেলে। স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথ ও ড. শাম্মীর অনুসারীরা উভ‌য়েই নিহত সিরাজকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছেন।

দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে বাতিল হবার পরে এখন ২ জানুয়ারী লীভ টু আপীলের শুনানীর জন্য অপক্ষেমান রয়েছে। অপরদিকে, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ইগল প্রতিক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া পঙ্কজ নাথ-এমপি।

মেহেদিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভুট্টো মোল্লা বলেন, “মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে ঢুকতে ছিলাম। আগে থেকে অবস্থান নেওয়া শাম্মী অনুসারীরা বোতল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সিরাজসহ ১৫ জনকে আহত করেন। এর মধ্যে সিরাজ মারা যান।”

শাম্মীর অনুসারী হিজলা উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘নিহত সিরাজ শাম্মীর অনুসারী, আমরা আগে থেকে সভাস্থলে ছিলাম। পঙ্কজ নাথের অনুসারীরা প্রবেশ করে মারামারি শুরু করলে দুপক্ষেরে এ গোলযোগের মধ্যে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ। তাকে উদ্ধার করে শের এ বাংলা মেডিকেল করেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

অপরদিকে বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথ সাংবাদিকদের জানান, “আমার লোকজন যখন জনসভার ময়দানে প্রবেশ করছিল, তখনই হামলা হয়। এটা পূরব পরিকল্পিত বলে দাবী করে তিনি বলেন, জনসভা মাঠে তারা লাঠি ও রড কোথায় পেল?”

অপরদিকে শাম্মী আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “সিরাজ কৃষক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের কোনো লোক তার পঙ্কজের সাথে নেই। আওয়ামী লীগের সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাদের হামলায়ই সিরাজ মারা গেছেন বলেও দাবী করেন তিনি।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কবির উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।তবুও সন্দেহের কারণে আমরা লাশ মর্গে পাঠান হয়েছ। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।” অপরদিকে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়ে হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বরিশাল কোতোয়ালি থানার ওসি আরিচুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, “সিরাজকে যিনি হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তিনি জানিয়েছেন, জনসভার মাঠে অসুস্থ হয়ে পরায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক সিরাজকে মৃত ঘোষণা করেছেন।