বাংলাদেশের বন্ধু জর্জ হ্যারিসন। বিংশ শতাব্দীর অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন জনপ্রিয় গায়ক এবং গিটারিস্ট তিনি। আজ (শনিবার)এ প্রতিভাধর শিল্পীর শুভ জন্মদিন। ১৯৪৩ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন জর্জ হ্যারিসন। বিখ্যাত ব্যান্ড সঙ্গীত দল ‘দ্য বিটল্স’ এর সদস্য।

সঙ্গীত পরিচালনা, রেকর্ড প্রযোজনা এবং চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রায় সবক্ষেত্রে সমান দক্ষতার ছাপ রেখেছেন জর্জ হ্যারিসন। মূলত: লীড গিটারিস্ট হলেও ১৯৬৫ সালের পর থেকে প্রকাশ হওয়া এই ব্যান্ডের প্রায় সব অ্যালবামেই তার নিজের লিখা ও সুর দেয়া দু’একটি একক গান থাকতো যা তার প্রতিভার পরিচায়ক ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘ট্যাক্সম্যান’, ‘উইদিন ইউ উইদাউট ইউ’, ‘হোয়াইল মাই গিটার উইপস’, ‘হিয়ার কামস দ্য সান’ ও ‘সামথিং’।

এরপর ১৯৮৮ সালে গঠিত হওয়া মিউজিক্যাল সুপারগ্রুপ ‘ট্রাভেলিং উইলবিউরিস’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জর্জ হ্যারিসন। যেটার সদস্য ছিলেন বব ডিলান, জেফ লাইন, রয় অরবিসন ও টম পেটি। তারা প্রত্যেকেই একক শিল্পী হিসেবেও সফল ছিলেন। বিখ্যাত ম্যাগাজিন রোলিং স্টোনের ‘সর্বকালের সেরা ১০০ গিটারিস্ট’ তালিকায় ১১তম স্থানে রয়েছেন জর্জ হ্যারিসন। ‘দ্য বিটলস’র সদস্য হিসেবে দুইবার তিনি রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেম-এ জায়গা করে নিয়েছেন।

১৯৭১ সালের কথা। সেই কঠিনতম সময়ে বাংলাদেশের দিকে ভালোবাসা ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন যারা এর মধ্যে প্রথমেই যে দুজন মানুষের নাম আসে, তারা হলেন ভারতীয় সেতারবাদক পন্ডিত রবিশঙ্কর ও ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী জর্জ হ্যারিসন। ১৯৭১ সালের পহেলা আগস্ট বাংলাদেশের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে কনসার্ট এর আয়োজন করা হয়েছিলো। বিখ্যাত সেই কনসার্টের নাম ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’। এই কনসার্টে জর্জ হ্যারিসন তার নিজের লেখা বিখ্যাত সেই মর্মস্পর্ষি ‘বাংলাদেশ’ গান পরিবেশন করেন। কনসার্টের টিকেট, ক্যাসেট হতে প্রাপ্ত সমস্ত অর্থ ইউনিসেফের ফান্ডে জমা করা হয়। বাংলাদেশীদের কাছে অন্যসব বিদেশি সঙ্গীতশিল্পীদের তুলনায় জর্জ হ্যারিসনের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান অনেক বেশি।

জনপ্রিয় এই গায়ক এবং গিটারিস্ট ২০০১ সালের ২৯ শে নভেম্বর ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ।