নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করছে বলে দাবি করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি। স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রচারিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ‘ইউএস মেডেলিং ইন বাংলাদেশ’ তথা ‘বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র’ শীর্ষক প্রতিবেদনের শুরুতেই উপস্থাপক বলেন, ‘তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে নিজের স্বার্থে বিশ্বের দেশে দেশে সরকার পরিবর্তনের ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি এরই মধ্যে সংসদে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) গণতন্ত্র হরণের চেষ্টা করছে। (তারা) এমন একটি সরকার আনতে চাচ্ছে যাদের গণতান্ত্রিক ভিত্তি নেই। এমনটি করা হলে তা হবে অগণতান্ত্রিক।’

প্রতিবেদনে র‍্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালের শেষ দিকে আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও এর ছয় শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

এ ছাড়া বাংলাদেশিদের ওপর একটি ভিসা নীতিও জারি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদানকারী যে কোনো বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। এ দুটি বিষয়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিবেদনে বলা হয়, এতেই বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রোধের মাত্রাটি বোঝা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিউবা, হাওয়াইসহ বেশ কিছু ক্যারিবীয় দেশের সরকার উৎখাতের ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। এ ক্ষেত্রে দেশটি তার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সহায়তা নেয়। অন্য দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এসব হস্তক্ষেপের নেপথ্যে বিভিন্ন বিষয় কাজ করে। দেশটি বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানবাধিকার রক্ষার নামে এসব করে থাকে।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে দাবি করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন নিজ স্বার্থে দেশটির গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত ও এগুলোর ওপর হস্তক্ষেপ করার মাধ্যমে মূল্যবান সম্পদ, বাণিজ্য রুট, কৌশলগত অবস্থানকে ব্যবহার করতে চায়। বিগত এক দশকে বাংলাদেশে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানব উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আগামী বছরের শুরুতে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, যার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন। প্রতিবেদন মতে, যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে চীন। তবে ভারত দেশটির নির্বাচন নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।