ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অংশীদারিত্ব বাড়াতে প্রস্তুত। এ অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য সহযোগিতা চুক্তি হতে পারে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য নতুন দিক অন্বেষণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

১৪ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

চিঠিতে উরসুলা ভন ডার লিয়েন উল্লেখ করেন, ‘আপনার সাম্প্রতিক চিঠিগুলোর জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে আমাদের বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও প্রত্যাশা সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামতের ভূয়সী প্রশংসা করি।’

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ইইউ একটি সংস্কার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে প্রস্তুত—যা হবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক নীতি, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং যা স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের দিকে পরিচালিত করবে। আমি টেকসই উন্নয়ন, সবুজ রূপান্তর, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও আর্থিক ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনের অগ্রগতির প্রতি আপনার অঙ্গীকারকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।

উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানান, ইইউ ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে এই বিষয়গুলোতে সম্পৃক্ত রয়েছে। আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্ভাব্য বিস্তৃত অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে নতুন পথ সন্ধানের প্রত্যাশায় রয়েছি। আমরা সেক্টরাল অংশীদারদের সঙ্গে নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করতে এবং চলমান উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অতিরিক্ত সহায়তা বিবেচনা করার জন্য উন্মুক্ত আছি।

গ্লোবাল গেটওয়ের অধীনে রেলপথ, জল সম্পদ, জলবায়ু অভিযোজন, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল, এনার্জিসহ নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক এবং সংযোগে ইইউ বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, সমান্তরালভাবে প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করে চলেছি। আমরা এই খাতগুলোর নীতি বিকাশ এবং কার্যকর প্রশাসনকে সমর্থন করার জন্য লক্ষ্যযুক্ত প্রযুক্তিগত সহায়তা একীভূত করে এই কাজের প্রভাবকে সর্বাধিক করতে চাই।

চিঠিতে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন, ইইউ-বাংলাদেশ সহযোগিতার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আমার পূর্ণ প্রতিশ্রুতি আছে। ইইউ প্রোগ্রামগুলোর সময়োপযোগী আপডেট, সহায়তার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা, ভাগ করা অগ্রাধিকারগুলোকে শক্তিশালী করতে এবং অংশীদারত্ব জোরদার করা, নতুন অনুরোধগুলো নিয়ে কাজ করা, কৌশলগত সংলাপ নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত সমন্বয় সভা আয়োজন করতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদও জানান উরসুলা ভন ডার লিয়েন।