জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) এর নির্বাহী পর্ষদের নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে এই ভোট গ্রহণ। বাংলাদেশ ১৮১ ভোটের মধ্যে ১৪৪ ভোট পেয়ে ইউনেস্কোর নির্বাহী পর্ষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস।

দূতাবাস জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানও বিজয়ী হয়েছে। দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, এই জয়ের ফলে বাংলাদেশ দুই বছরের বিরতিতে আগামী ২০২৩-২৭ মেয়াদে পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত হলো।

এদিকে আজ (বৃহস্পতিবার) শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি তার ফেসবুক পোস্টে এই জয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ, দূরদর্শী, সাহসী নেতৃত্বে অগ্রগামী বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় সবার প্রশংসা ও আস্থা অর্জন করেছে। সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে দেয়া পোস্টটিতে তিনি সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এছাড়া তিনি ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি অ্যাম্বাসেডর খন্দকার মো. তালহা, দূতাবাসের প্রথম সচিব ওয়ালিদ বিন কাসেম ও তাদের অন্যান্য সহকর্মীদের। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেসকোকে (বিএনসিইউ) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকেও অভিনন্দন জানান তিনি।

নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অঁদ্রে আজুলে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে অভিনন্দন জানান এবং উভয়ে একযোগে আগামীদিনেও কাজ করবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ইতোপূর্বে বাংলাদেশ ২০২২ সালে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিটি এবং ২০২৩ সালে আন্তরাষ্ট্রীয় সমুদ্র কমিশনের নির্বাচনে জয়লাভ করে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নেতৃত্বে এই সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই জয় বিগত দেড় দশকে আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সুদৃঢ় কূটনৈতিক অগ্রযাত্রার ফল। বিজয়ী বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে সকল সদস্য রাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে।

বাংলাদেশকে সমর্থনের জন্য ইউনেস্কো সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী প্যারিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সক্রিয় কূটনীতির প্রশংসা করেন।

এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ তার নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ইউনেস্কোতে কূটনৈতিক সন্ধ্যার আয়োজন করে যেখানে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের মূল পাঁচটি ভিত্তির আলোকে বাংলাদেশের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ ও নৈতিক কূটনীতির আরও একটি সাফল্য হিসেবে এ জয়কে দেখছেন ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে যোগদানকৃত প্রথম আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে ইউনেস্কোতে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে গভীরভাবে সংযুক্ত রয়েছে বাংলাদেশ।