ফ্লোরিডা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরব অংশগ্রহণে লাল সবুজের ভিড়ে প্রথমবারের মতো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মায়ামী। জাতীয় এই দিবসটি উপলক্ষে কনস্যুলেট জেনারেল প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ৬ জন মুক্তিযাদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন সাঈদ হারুন, দুলাল মিয়া, ফজলুর রহমান, সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, বুলবুল চৌধুরী ও নান্নু আহমেদ। 

একতারা ফ্লোরিডার পিয়ালী শুক্লার আহব্বানে মিসেস ইকবালের নেতৃত্বে নারীরা সমবেত স্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ। নবস্থাপিত কনস্যুলেট জেনারেল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং মায়ামীতে অবস্থানরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী বাংলাদেশী ও স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই কনসাল জেনারেল কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এরপর কনসাল জেনারেল ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তাবৃন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, ফ্লোরিডাস্থ বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধের সকল বীর শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে তাঁদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। পরবর্তীতে স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রাক্বালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁদের স্মৃতিচারণ করেন এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ তাঁর বক্তব্যে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে সশ্রদ্ধচিত্তে লাখো শহিদ ও নির্যাতিতা বীরাঙ্গনাদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন। যার যার অবস্থান থেকে বিদেশীদের কাছে আমাদের লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে কনসাল জেনারেল উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

আলোচনা পর্বে বক্তারা মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও ভূমিকা এবং পঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির নানান দিক তুলে ধরেন। তারা বলেন, জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরী আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।

 অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কন্ঠশিল্পী পিয়ালী ও শর্মিলার পরিবেশিত দেশের গান সম্মলিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি  সবাইকে মুগ্ধ করে।