ঢাকা টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এরফলে ১ ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ জয় মানেই বড় অর্জন। ঘরের মাঠে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে দীর্ঘ দিনের সেই আক্ষেপ মোচন করেছিল বাংলাদেশ। এবার সিরিজ জিতে ইতিহাস রচনার দ্বারপ্রান্তে ছিল টাইগাররা। ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুরে চতুর্থ দিনে টেস্ট সিরিজ জয়ের দৃশ্যপটও তৈরি করেছিল শান্ত বাহিনী।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৯ রানেই ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন নিউজিল্যান্ডের। মিরপুরের গ্যালারিতে হাজারখানেক দর্শকও তখন রীতিমত গর্জন-হুঙ্কারে ব্যস্ত। তবে সেখান থেকেই যেন নিউজিল্যান্ডকে পথ দেখালেন গ্লেন ফিলিপস আর মিচেল স্যান্টনার। প্রথম ইনিংসে এই ফিলিপসে ভর করেই লিড পেয়েছিল কিউইরা। ঢাকা টেস্টের শেষবেলাতেও ফিলিপসই হতাশ করলেন বাংলাদেশ। টাইগার ক্রিকেটভক্তরা আরও একবার দেখলেন তীরে এসে তরি ডোবানোর মত ম্যাচ।
১৩৭ রানের জয়টাকেও একসময় নিউজিল্যান্ডের জন্য কঠিন করে ফেলেছিলেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছিল কিউই ব্যাটাররা।তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে গ্লেন ফিলিপস আর মিচেল স্যান্টনারের ৭০ রানের জুটিতে ৪ উইকেটের জয় পায় কিউইরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ঘরের মাঠে নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছেন। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। পিচে বল প্রচুর টার্ন করলেও সেভাবে সর্তক হয়ে খেলেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ফলে মাত্র ১৪৪ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময়ী ইনিংস।
দ্বিতীয় ইনিংসে জাকির হাসানের ফিফটির সুবাদে কোনো মতে ১৪৪ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। অ্যাজাজ প্যাটেল আর মিচেল স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে একের পর এক উইকেট হারিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কিন্তু অপরপ্রান্ত ধরে রেখেছেন ওপেনিংয়ে নামা জাকির হাসান। অবশেষে চাপের মুখে থেকেও টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি হাঁকিয়েছেন এই টাইগার ব্যাটার।
নাজমুল হোসেন শান্ত, মুুুুুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম ও নাঈম হাসান, তাইজুলের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি করে ৮৬ বলে ৫৯ রান করেন জাকির।
দিনের শুরুটা ভালো করলেও অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। এরপর তো খেই হারিয়ে বসেন ব্যাটাররা। অ্যাজাজের এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে মুমিনুল (১৯ বলে ১০) ফেরার পর একে একে উইকেট বিলিয়ে দেন মুশফিকুর রহিম, শাহাদাত হোসেন দিপু ও মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান, নাঈম হাসান ও শরিফুল ইসলাম।
ব্যাট করতে নেমে পিচে সেটই হতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। খেলেন মাত্র ১২ বল। ৯ রান তুলে স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে স্লিপে থাকা ড্যারিল মিচেলের হাতে ধরা পড়েন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। এরপর স্যান্টনারের দ্বিতীয় শিকার হন শাহাদাত। ১১ বলে ৪ রান করে এলবিডব্লিউ হন এই ডানহাতি।
ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ মিরাজও। মাত্র ৩ রান করে অ্যাজাজের বলে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার। নুরুল হাসান সোহান বরাবরের মতোই ব্যর্থ। এদিন তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ডাক মেরে অ্যাজাজের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৬ উইকেট শিকার করেন অ্যাজাজ প্যাটেল। ৩টি উইকেট শিকার করেন মিচেল স্যান্টনার। ১টি উইকেট তুলে নেন টিম সাউদি।