বিএনপিকে মোকাবিলা করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা দুটোই আছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আজ (সোমবার) দুপুরে সচিবালয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ, সেটা হচ্ছে বিএনপির সাংঘর্ষিক রাজনীতি। তারা কী করতে চায় বা কী করতে পারে, সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। সেসব মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা দুটোই আছে। তাদের মোকাবিলা করা আমাদের জন্য কঠিন কোনো কাজ নয়।
তিনি বলেন, ১০ই ডিসেম্বরের পর বিএনপি বুঝতে পেরেছে তাদের শক্তি এবং সামর্থ্য কতটুকু। বিএনপি এ বছরও চেষ্টা করবে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য। বর্তমান অবস্থা হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে জনগণতো দূরের কথা, তাদের নেতা-কর্মীরাও নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সবচেয়ে বড় যে বিষয় সেটা হলো সারাবিশ্বে সংকটময় পরিস্থিতি চলছে। করোনা মহামারি চলে গিয়েছিল, দুই মাস আগেও তাই ভেবেছিলাম। কিন্তু দেখা গেলো করোনা যায়নি। চীনসহ কয়েকটি দেশে করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। পাশাপাশি চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে ভালো রাখা এবং সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, সেটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। গত তিন বছরও চ্যালেঞ্জ ছিল, সেটা আমরা মোকাবিলা করতে পেরেছি। আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ বছরও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারবো।
তিনি বলেন, মানুষ কিন্তু ভুলে যায় আগে কেমন ছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার আগে বিদ্যুতের আওতায় ছিল মাত্র ৪০ শতাংশ। এখন বিদ্যুৎসুবিধা পায় শতভাগ। কিছুদিন আগে যখন লোডশেডিং হলো তখন মানুষ হৈ হৈ রৈ রৈ শুরু করেছিল। কিন্তু এখন আর লোডশেডিং নেই। সে খবর পত্রিকার পাতা বা টিভির খবরে নেই। তো মানুষ অতীত ভুলে যায়। আগে যে রাস্তাঘাট ছিল না, যে রাস্তায় রিকশা নিয়ে চলা দুষ্কর ছিল, এখন সেখানে গাড়ি চলে। এ বিষয়গুলো মানুষ ভুলে গেছে। ১৪ বছর আগে কি ছিল? আমরা ক্ষমতায় আসার আগে তো সব বদলে দিতে পারিনি। আর আজকে কী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছি সে অবস্থা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে। এক্ষত্রে আমি গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো হবে বলে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির নেতারা এসমস্ত কথা প্রতিদিন বলেন। বর্তমান অবস্থা হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে জনগণতো দূরের কথা তাদের নেতাকর্মীরাও নেই।
তিনি বলেন, কর্মীরা এখন নেতাদের কাছে প্রশ্ন করে সরকার বলেছিল, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে, সেখানে আপনারা করলেন না কেন? না করে লাভ কী হলো? এটাই হচ্ছে বিএনপির নেতাদের প্রতি কর্মীদের প্রশ্ন। এখন জনগণতো দূরের কথা তাদের কর্মীরাও তাদের ডাকে সারা দিচ্ছে না। তাদের এই নেতৃত্ব কতটুকু করতে পারবে সেটা তারা ভালো জানে।
মন্ত্রী বলেন, গত ডিসেম্বরে বিএনপি দুটি হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি হচ্ছে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার গো ধরা। সেটা করে তাদের রাজনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। অপরটি হচ্ছে তাদের সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা। এতেও তাদের ক্ষতি হয়েছে। এই প্রশ্নই বিএনপির ভেতরে ঘোরপাক খাচ্ছে। কেন এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। খন্দকার মোশাররফ হোসেনরা সে সিদ্ধান্তের জবাবে দিতে পারেন না তো, এ জন্যই উচ্চবাচ্য করে কর্মীদের আস্বস্ত করতে চান।