প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের অর্থনীতি নিয়ে নানান গুজব রটাচ্ছে। গুজব থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। আজ (রোববার) চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আওয়ামী লীগের জনসভায় দেওয়া ভাষণে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এসব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে জ্বালানি ও খাদ্যের অভাব আছে। তাই সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে।
ভোট চুরি করে যারা ক্ষমতায় এসেছিলো দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তাদের আন্দোলন ভোট চুরি ও মানুষ খুন করা। বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই উন্নয়ন অব্যাহত আছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত-জোটের হাত থেকে কেউ রক্ষা পায়নি। সারাদেশেই এই জোট তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা ১৫ই আগস্ট জাতিরপিতাকে হত্যা করেছে। এরপর বঙ্গবন্ধুর খুনি আলবদররা ক্ষমতায় এসেছিল। সেজন্য বাংলাদেশ আর এগোতে পারেনি’।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে এদেশের মানুষ বিজয় অর্জন করেছে। আমরা সেই বিজয়ী জাতি। সেউ বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি। জাতির পিতার ভাষণ, এমনকি জয় বাংলা স্লোগান বন্ধ করেছে বিএনপি-জামায়াত গংরা। আজ জয় বাংলা স্লোগান, ৭ই মার্চের ভাষণ ফিরে এসেছে, বাংলাদেশে প্রাণ ফিরে এসেছে। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলে মর্যাদা পেয়েছে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১০ই ডিসেম্বর নাকি বিএনপি রাজধানী দখল করবে, আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে। আমি তাদের একটা কথা বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। সে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই দেশের মানুষ তাদের মেনে নেয়নি। সারাদেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছিল। দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। সেকথা বিএনপির মনে রাখা উচিত। জনগণের ভোট যদি কেউ চুরি করে বাংলাদেশের মানুষ তাদের মেনে নেয় না’।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভোটে যেতে চায় না। কারণ জিয়াউর রহমান জোর করে গণতন্ত্র ধ্বংস করে ক্ষমতায় এসেছিল। তাদের ধারণা সেভাবেই তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে। তারা গণতান্ত্রিক ধারা পছন্দ করে না’।
দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই উন্নয়ন হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন গণতন্ত্র থাকাতেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়ন করি মানুষের কল্যাণ দেখে। আর বিএনপি মানুষ খুন করে, গ্রেনেড মারে, বোমা মারে, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। তারা চায় না দেশের মানুষ ভালো থাকুক। ক্ষমতায় থাকতে তারা দু’হাতে লুটপাট করেছে’।
এদিকে জনসভার মূল মাঠ পলোগ্রাউন্ড এর বাইরে আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে বড়পর্দায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার ব্যবস্থা করেছে চট্টগ্রামবাসী। চট্রগাম নগরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশ করছেন দীর্ঘ ১১ বছর পর। তাই এই সমাবেশকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীরাও বেশ উচ্ছ্বসিত। এর আগে সকাল দশটা থেকেই সমাবেশকে ঘিরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সেখানে বক্তৃতা করেন দলের স্থানীয় নেতারা।