ইরানে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সরকার বিক্ষোভকারীদের উপর দমনপীড়ন চালিয়েছে কিনা তা তদন্তের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাকে ‘রাজনৈতিক কমিটি’ অভিহিত করে সহযোগিতা করা হবে না বলে বলা হয়েছে। খবর আল জাজিরা।
সোমবার (২৮শে নভেম্বর) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কেনানি বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ গঠিত রাজনৈতিক কমিটিকে কোনো সহযোগিতা করবে না ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর এই বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে; যার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে দমনপীড়ন চালানো হয়েছে অভিযোগ তা তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার (২৪শে নভেম্বর) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’।
তদন্ত কমিটি গঠনের পর পশ্চিমা কূটনীতিকরা বলেন, ‘স্বাধীন এই তদন্তের মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হবে এবং দেশটির নারীদের সমর্থন করে শক্ত বার্তা দেয়া হবে।’
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে এক সভায় সংস্থার প্রধান ভলকার তুর্কি বলেন, ‘গত নয় সপ্তাহে প্রায় ১৪ হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে এবং ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’ ইরান কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গেই ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’কে ‘আগ্রাসী রাজনৈতিক তৎপরতা’ হিসেবে বর্ণনা করে তা নাকচ করে দেয়।
সঠিকভাবে হিজাব না করার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হয় গত ১৬ই সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে ইরানজুড়ে। সেই আন্দোলন এখনও চলছে। ইরানের পক্ষ থেকে দেশটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিদেশি শত্র“ ও তাদের প্রতিনিধিদের দায়ী করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) বলেছে, ইরানের বিক্ষোভে ৩০০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৪০টি শিশু রয়েছে। এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত মাসে ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও পুলিশসহ ৪৬ জন বিক্ষোভে নিহত হয়েছেন।