ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বিটিআরসিকে বলেছেন হাইকোর্ট।
আজ (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে এক শুনানি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আদেশ দেন।
আদালতে ভিডিও অপসারণের নির্দেশনা প্রার্থনা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আদালত ও আইনজীবীদের মর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। আমরা এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।
এর আগে গত ৫ই জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী ও অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামকে তলব করেন হাইকোর্ট। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
এর আগে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিচার চেয়ে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে অভিযোগ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠানো বিচারকের অভিযোগ বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানো হয়।
হাইকোর্টে পাঠানো ওই আবেদনে বলা হয়, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক কর্তৃক অত্র কোর্টে প্রেরিত পত্রে জানানো হয়েছে, তিনি গত দোসরা জানুয়ারি যথাসময়ে বিচার পরিচালনার জন্য এজলাসে আসেন। দৈনন্দিন কার্য তালিকায় নির্ধারিত মামলাগুলো শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
এজলাস চলাকালে বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. তানভীর ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী, অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামসহ ১০ থেকে ১৫ জন আইনজীবী আসেন এবং তারা অশালীন ও অসৌজন্যমূলকভাবে তাকে এজলাস থেকে নেমে যাওয়ার জন্য বলেন। এসময় বারের সভাপতি আদালতকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
আদালতের এজলাসে কোর্ট ইন্সপেক্টর, আদালতের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্য, আদালতের কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থী জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ঘটনাটি ভিডিও করেন। পরে ভিডিওটি তার হস্তগত হয়।