বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, বাংলাদেশে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই খাতকে এগিয়ে নিতে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এছাড়া বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ভিসা সহজ করতে হবে। আর সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’

বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘ট্রিপলাভার ঢাকা ট্রাভেল মার্ট-২০২২’ মেলার উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি চাই দীর্ঘদিন পর পর্যটন মেলা আয়োজনের এই মহতী উদ্যোগ সফল হোক, স্বার্থক হোক।

মাহবুব আলী বলেন, করোনায় পর্যটন, এভিয়েশন খাত ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। সেখান থেকে কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে। করোনার সময় ইউএস বাংলা, নভোএয়ারসহ বেসরকারি এভিয়েশন প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মধ্যে জনগণকে সেবা দিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা বিমান বাংলাদেশ শুরু করলেও লসের কারণে আর চালাতে পারিনি।

পর্যটনকে আরও সমৃদ্ধ করতে সব ধর্মের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে এমন মন্তব্য করে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ। এটাকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে। আমি মনে করি যদি সবার চেষ্টায় এখাতকে এগিয়ে নিতে পারি তাহলে জিডিপিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে পর্যটনখাত।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি পর্যটক দেশে আনতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। ট্যুরিজমকে মাথায় রেখে এ প্রক্রিয়া যতটা সহজ করা যায়, আমরা তা নিয়ে আলোচনা করছি। পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল-ভুটানে কোনো সমুদ্র সৈকত নেই। আমরা যদি তাদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে পারি, সেক্ষেত্রে অনেক পর্যটক পাব। এ বিষয়ে আমি দ্রুত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক করব। সেখানে এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের ডাকব।’

বিমানের অনিয়মের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেবার মানের ক্ষেত্রে কোনো আপোষ নেই।’

দুবাইতে পর্যটনের হাব গড়ে উঠেছে এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদেরও ফেস্টিভ মুড ধরে রাখতে হবে। এই মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাংগো ফেস্টিভ্যাল করা হবে। সেখানে কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

তেলের দামসহ এভিয়েশন খাতের যেসব সমস্যা আছে তা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তেলের দামসহ যেসব সমস্যার কথা তারা বলেছেন কিভাবে তার সামাধান করা যাবে তা নিয়ে শিগগিরই আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো। সচিবকে আমি বলে দিয়েছি সব স্টক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করবো এসব সমাধানে কাজ করবো।

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, মেগা প্রকল্প চালু হওয়ায় পর্যটনে প্রভাব পড়বে এমন দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে পদ্মা সেতু হয়েছে, মেট্রোরেল হচ্ছে। আমি যে দেশেই যাই, সেই দেশে মেট্রোরেল দেখি। আমাদের দেশের মেট্রোরেল সব দেশ থেকে উন্নত অত্যাধুনিকভাবে তৈরি করেছে জাপানের ইঞ্জিনিয়াররা। ডালাসের মতো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। বিমানবন্দরের টার্মিনাল হচ্ছে। আশা করি ২০২৩ সালের অক্টোবরে উদ্বোধন করা যাবে। কক্সবাজারের সমুদ্র ছুঁয়ে রানওয়েতে নামবে প্লেন। কাজগুলো আস্তে আস্তে হচ্ছে। এই অর্জনগুলো দেশের পর্যটন শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি।

দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়াতে পর্যটনখাত বড় ভূমিকা রাখতে পারে জানিয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে ট্যুরিজম খাতে। কারণ এখাতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বড় খাত এটি। গার্মেন্টস, তথ্য প্রযুক্তির পর ট্যুরিজম খাত থেকে বেশি আয় করা সম্ভব।