বিদেশে অবস্থিত যেকোন সম্পদের উপর কর পরিশোধ করা হলে দায়মুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এ ক্ষেত্রে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্য কোন কর্তৃপক্ষই সেই সম্পদের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

‘কোভিড অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশকালে এ প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হতে পারে। আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিক বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার পন্থা অবলম্বন করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য একদিকে অধিক পরিমাণে রাজস্বের জোগান দিতে হবে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে হবে। এ অবস্থায় বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদকে অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার মাধ্যমে বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী বিদেশে অবস্থিত যে কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করবে না।

বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১০ শতাংশ এবং বাংলাদেশে রেমিটকৃত নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে কর ধার্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সুবিধা ২০২২ সালের পহেলা জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পযর্ন্ত বলবৎ রাখার প্রস্তাবও করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিধান কার্যকর হলে অর্থনীতির মূল স্রোতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে, আয়কর রাজস্ব আহরণ বাড়বে এবং করদাতারাও বিদেশে থাকা তাদের অর্থ-সম্পদ আয়কর রিটার্নে প্রদর্শনের সুযোগ পেয়ে স্বস্তি বোধ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ এ বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। দেশের ৫১তম এ বাজেটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের অতীত অর্জন ও উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে এবারের বাজেট তৈরি করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও শিক্ষায়।