বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতিতে নিজেদের খাদ্য চাহিদা মেটাতে, বেশি বেশি ফসল ফলানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসাথে দেশের মাটি ও মানুষকে কাজে লাগিয়ে, সবাইকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৩ই সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক সভায়, এসব নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় তিনি বলেন, বিশ্বমন্দার কারণে গত দু’বছর ধরে দেশের অর্থনীতি চাপের মুখে রয়েছে। তাই মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। অক্টোবরের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশাবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। মন্ত্রী জানান, একনেক সভায় ৮ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ছ’টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনার আগে জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। যাতে করে সরকারি টাকায় কেনা যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার পায় জনগণ।

ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্স (ইনমাস) মিডফোর্ড, কুমিল্লা, ফরিদপুর, বরিশাল ও বগুড়া-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমি চাকরি জীবনে যখন মাঠ পর্যায়ে ছিলাম তখন দেখেছি, অনেকে স্বাস্থ্যের যন্ত্রপাতি খুলতেই পারে না। তবে কীভাবে মানুষ সঠিক সেবা পাবে?

এদিন বৈঠকে ‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র হ্রাসকরণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পুষ্টির চাহিদা মেটানো ও দারিদ্র দূরীকরণে সারাদেশে মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ করবে সরকার। ৯৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২২ হতে জুন ২০২৭ মেয়াদে এই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দেশের ৬৪টি জেলার যেসব উপজেলায় মাশরুম চাষের সম্ভাবনা রয়েছে তেমন ১৬০টি উপজেলা ও ১৫টি মেট্রোপলিটন থানায় মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা আছে। মাশরুম একটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবার, যা চাষের জন্য আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। অনুৎপাদনশীল স্বল্পপরিমাণ জমিতে স্বল্প পুঁজিতে মাশরুম উৎপাদন করা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়া বছরব্যাপী মাশরুম চাষের উপযোগী। হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং উচ্চবিত্ত জনগণের কাছে মাশরুমের পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের মাশরুম চাষে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।