চলতি সপ্তাহে ব্যাংকের এক একাউন্ট থেকে দুই লাখ টাকার বেশি নগদ উত্তোলন করা যাবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সময় চেক লেনদেন নজরদারি এবং সন্দেহজনক লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশও দেয়া হয়। শনিবার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিটি সব ব্যাংকের এমডিকে জানানো হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেওয়ার দিন নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংকগুলো থেকে এক লাখ টাকার বেশি তুলতে না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল
ব্যাংকাররা বলছেন, গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তারা ব্যাংক থেকে বেশি বেশি টাকা তোলা শুরু করেন। সে কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি বিভাগ ওই নির্দেশনা দেয়।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটও (বিএফআইইউ) দেশের এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যাংক লেনদেনে অতিরিক্তি সতর্কতা অবলম্বন করতে সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর প্রধান অর্থপাচার নিরোধ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে ওই নির্দেশনা দেয় বিএফআইইউ।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ বেশিরভাগ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। রাস্তায় নেই পুলিশের টহল। এ রকম অবস্থায় ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে বের হলে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। আবার ব্যাংকগুলোও এক শাখা থেকে আরেক শাখায় সহজে টাকা দিতে পারছে না। অনেক এটিএম বুথেও পর্যাপ্ত টাকা মিলছে না। এরই মধ্যে শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় পদত্যাগ করেছেন। প্রধান বিচারপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই পদ ছেড়েছেন। আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতার খোঁজ মিলছে না। এ অবস্থায় তৈরি হয়েছে নিরাপত্তা শঙ্কাও।
প্রসঙ্গত, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ কিছুটা বেড়ে যায়। বিশেষ করে আওয়ামীপন্থী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী পরিবার থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ দেখা যায়। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সেজন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।