অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। আজ রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে টাইগার যুবারা।
আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ১৯৮ রানের সংগ্রহ গড়ার পর জিততে হলে টাইগার বোলারদের দুর্দান্ত পারফর্ম করতেই হতো। সে দায়িত্বটা দারুণভাবেই পালন করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। ভারতের ব্যাটারদের মধ্যে অন্যতম বৈভব সূর্যবংশী। ১৩ বছরের এই ওপেনার এবারের আইপিএল নিলামে কোটি টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়েছেন। চলমান টুর্নামেন্টেও ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৬ বলে ৬৭ রান করেছিলেন তিনি, এরপর গ্রুপ পর্বে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচেও তিনি খেলেছিলেন ৪৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংস
তবে বৈভবকে আজ হাত খুলে খেলতে দেননি বাংলাদেশী বোলাররা। তরুণ এই ওপেনার আউট হয়েছেন ৭ বলে ৯ রান করে। দলীয় ২৪ রানেই মারুফ মৃধার বলে আউট হন বৈভব। এর আগেই অবশ্য, ভারতের আরও এক উইকেট তুল নিয়েছিলেন আল ফাহাদ। তার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন ভারতের আরেক ওপেনার আয়ুশ মাত্রে।
এরপর দ্রুতই আরও এক উইকেট হারায় ভারত। দলীয় ৪৪ রানে বাংলাদেশকে ফের ব্রেকথ্রু এনে দেন রিজন হোসেন। এরপর ভারতের বাকি তিন উইকেট নিয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমন। লাল-সবুজের দলের হয়ে সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও তিনি নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। ইমনের তোপে ৮১ রানেই ৬ উইকেট হারায় ভারতীয়রা।
এদিকে ৬ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেছিলেন ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তবে ভারতের অধিনায়ককে ইনিংস বড় করতে দেননি টাইগারদের অধিনায়ক তামিম। তামিমের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ২৬ রানে সাজঘরে ফিরেন আমান। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটিও খেলেছেন তিনিই। আমানের আগে আরও এক উইকেট হারিয়েছিল ভারত। শেষ পর্যন্ত ৩৫.১ ওভারে ১৩৯ রান করেই ভারত অলআউট হলেও ৬০ রানের জয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার কালাম সিদ্দিকী। ৬৫ বলে ২০ রান করে তাকে সঙ্গ দেন জাওয়াদ আবরার।
এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি আজিজুল হক তামিমও। মাত্র ১৬ রান করে ফেরেন এই টাইগার অধিনায়ক। রিজানকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন শিহাব জেমস। তবে ফিফটি তুলতে পারেননি দুজনের কেউই।
৬৭ বলে ৪০ রান করে ফেরেন শিহাব, ৩ বলে ১ রান করে তার দেখানো পথে হাঁটেন দেবাশীষ দেবাও। এরপর ৬৫ বলে ৪৭ রান করে রিজান আউট হলে দলীয় ১৫৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। সামিউন বসির ৪ এবং ১ রান করে উইকেট মিছিলে যোগ দেন আল ফাহাদ।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে থাকেন ফরিদ হাসান। তাকে সঙ্গ দেন মারুফ মৃধা। ৪৯তম ওভারে চতুর্থ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ফরিদ। ৪৯ বলে ৩৯ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
শেষ ওভারের প্রথম বলে ইকবাল (১) আউট হলে মারুফ মৃধার অপরাজিত ১১ রানে ভর করে ১৯৮ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে হার্দিক রাজ, যুধাজিৎ গুহ ও চেতন শর্মা দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও কিরণ চোরমলে, কেপি কার্তিকেয়া ও আয়ুশ মাত্রে একটি করে উইকেট শিকার করেন।