ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে  ৫ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতেও জেতে ১ উইকেটের ব্যবধানে। এক ম্যাচ আগেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে গেল প্রথমবার দলকে নেতৃত্ব দেওয়া লিটন দাসের দলের। আগে ব্যাট করতে নমে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের ব্যাটে ভর করে ২৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। মিরাজের ৮৩ বলে শতক আর মাহমুদউাল্লাহর অর্ধশতকে লড়াকু পুজি সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতের হয়ে ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পাওয়া রোহিত শর্মার বদলে এদিন ইনিংস উদ্বোধনে আসেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। প্রথম বলেই চার হাঁকান কোহলি। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে এসে তাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান এবাদত হোসেন।

পুল করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়ে যান কোহলি। আউট করেই ছুটতে শুরু করেন এবাদত। দৌড়ে যান ড্রেসিং রুমের কাছে। স্যালুট জানান ড্রেসিং রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পেস বোলিং কোচ গুরু অ্যানাল্ড ডোনাল্ডকে। ৬ বলে ১ চারে ৫ রান করেন কোহলি।

পরের ওভারে বাংলাদেশ আরও এক উইকেট নেয়। এবার মোস্তাফিজ ফেরান শেখার ধাওয়ানকে। পয়েন্টে দাঁড়ানো মিরাজের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। পরে লোকেশ রাহুল ও ওয়াশিংটন সুন্দর ফিরলে ৬৫ রানেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত।

সেখান থেকে দলকে ঘুরে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন শ্রেয়াস আয়ার ও অক্ষর প্যাটেল। দুজনেই পেয়ে যান হাফ সেঞ্চুরির দেখাও। দুজন মিলে গড়েন ১০৭ রানের জুটি। এবারও বাংলাদেশের ভরসার আলো হন মেহেদী হাসান মিরাজ।

তাকে আকাশে ভাসিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন আয়ার। কিন্তু তিনি মিরাজের বলে ধরা পড়েন ডিপ মিডউইকেটে দাঁড়ানো আফিফ হোসেনের হাতে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব বলে ঠিকঠাক ক্যাচটা নেন আফিফ। ১০২ বলে ৮২ রান করেন আয়ার।

খানিক বাদেই সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর প্যাটেলও, এবার সেই এবাদত বোলিংয়ে এসে নেন উইকেট। ৫৬ বলে ৫৬ রান করা অক্ষর ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। চোট পাওয়া রোহিত শর্মা ব্যাটিংয়ে নামেন ৯ নম্বর ব্যাটার হিসেবে। এবাদত হোসেন ৪৯তম ওভারে ক্যাচ ফেলে দেন।

এরপর টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে ফেলেন রোহিত। ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ২৮ বলে ৫১ রান করলেও দলকে জেতাতে পারেননি ভারতীয় অধিনায়ক। তবে ম্যাচ নিয়ে যান শেষ বল অবধি।

এর আগে বুধবার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। লিটনের সঙ্গে আজ ওপেন করেন এনামুল হক বিজয়। শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু সেই ভালোটা বেশিক্ষণ রইলো না। ৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১১ রান করে বিজয় আউট হয়। বিজয়ের পর লিটন দাসকেও সাজঘরের পথ দেখান মোহাম্মদ সিরাজ। ভারতীয় এই পেসারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক (২৩ বলে ৭)।

ইনিংসের ১৪তম ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকে পেয়ে আর উইকেট তুলে নিতে দেরি করেননি উমরান। প্রথম বলেই তিনি ১৫১ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির এক বলে ভেঙে দেন শান্তর স্টাম্প। ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২১ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ওয়াশিংটন সুন্দরকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ২০ বলে ৮ রানেই থামে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ইনিংসটি।

এরপর এক ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। মুশফিক খেলছিলেন বেশ দেখেশুনে। সুন্দরের ঘূর্ণিতে তার প্রতিরোধও ভেঙে যায় ১৯তম ওভারে। ২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। এর পর মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে আড়াই শত রান পার করে বাংলাদেশ। তবে ৪৭ তম ওভারে উমরান মালিকের করা প্রথম বলে ক্যাচ তুলে দেন রিয়াদ। এর আগে ৯৬ বলে ৭৭ রান সংগ্রহ করেন তিনি। এর পর মেহেদীর সাথে বাকি কাজ শেষ করেন নাছুম আহমেদ। তার মারমুখি ব্যাটে ১১ বলে ১৮ রান আসে। আর মিরাজ করেন ৮৩ বলে ১০০ রান।