প্রেমের জন্য রাজ্য ছাড়ার নজির ইতিহাসে অনেক আছে। লাইলী-মজনু, শিরিন-ফরহাদ, রোমিও-জুলিয়েট প্রভৃতি কালজয়ী প্রেমের কাহিনী আমাদের শিহরিত করে। কখনো কখনো বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো প্রেমের কাহিনী পড়ে আমাদের চোখ কপালে উঠে যায়। কাহিনীর গভীরতা মনে প্রবল আকর্ষণ সৃষ্টি করে। বারবার শুনতে ইচ্ছে হয় সেই প্রেমের উপাখ্যান।

ব্রিটেনের রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড। কালজয়ী প্রেমকাহিনী দিয়ে অন্য আর দশজন রাজার চেয়ে নিজেকে একদম আলদা প্রমাণ করেছেন তিনি। ১৯৩৬ সালের ১০ ডিসেম্বর রাজা এডওয়ার্ড অ্যাবডিকেশন বা সিংহাসনের মায়া ত্যাগের মাধ্যমে প্রেমকে জিতিয়ে প্রমাণ করেন সিংহাসনের চেয়ে প্রেম বড়।

এবার সেই পথই অনুসরণ করলেন জাপানের রাজকুমারী মাকো। মিলিয়ন ডলার অর্থ আর পদবি ছেড়ে প্রেমিক কেই কোমারোকে বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমাচ্ছেন তিনি।

রাজকুমারী মাকো জাপানের ক্রাউন প্রিন্সের মেয়ে এবং সম্রাট নারুহিতোর ভাতিজি। নিজের পছন্দে সাধারণ একজনকে বিয়ে করায় জাপানি রাজপরিবারের নিয়মানুযায়ী নিজের পদবী হারাবেন ২৯ বছর বয়সী মাকো।

রাজ পরিবারের বিয়ে সাধারণ বিয়ের চেয়ে অনেকটা ভিন্ন। তবে এই প্রেমিকযযুগল ঐহিত্যবাহী আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মাকোর বাবাব ক্রাউন প্রিন্স আকিশিনো গত বছর জানিয়েছিলেন, মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে অমত নেই তার। তবে মাকোকে এজন্য জনগণের সমর্থন আদায় করে নিতে হবে। যদিও মাকো এসবের মধ্যে না গিয়ে সব ছেড়েছুড়ে প্রেমিকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেই সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এমনকি রাজপরিবারের বাইরে কোনো রাজকুমারী বিয়ে করলে রাজপরিবারের তরফ থেকে যে এককালীন অর্থ দেওয়া হয় তা নিয়েও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মাকো। কী পরিমাণ অর্থ গ্রহণে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তা জানা যায়নি। তবে রাজকুমারী মাকো প্রায় ১৩৭ মিলিয়ন ইয়েন বা ১২ লাখ ডলারের বেশি অর্থ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে।

এদিকে রাজকুমারী মাকোর এই বিয়ে নিয়ে জাপানে স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রেমের জন্য রাজকুমারীর এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন।

রাজকুমারী মাকোর প্রেমিক কেই কোমারো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন বলে জানা গেছে। চলতি বছরের শেষের দিকে তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।