নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে মৃত্যু হওয়া জেসমিন সুলতানার শরীওে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। “শক” (মানসিক চাপ) থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। আজ (সোমবার) রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় ও ময়নাতদন্ত টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা তার (জেসমিন) শরীরে দুটো জখম পেয়েছি। যা খুবই ছোট। এর একটি কপালের বাঁ পাশে ছোট কাটা। এছাড়া ডান হাতের কনুইয়ের ভেতরের দিকে ২ সেন্টিমিটার স্থানে একটি ফোলা জখম ছিল। এটি সাধারণত চিকিৎসা গ্রহণের জন্য রোগীর হাতে ক্যানোলা করার সময় হয়। এই যে দুটি ইনজুরি রয়েছে তা মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট নয়। তার মৃত্যু হয়েছে “শক” (মানসিক চাপ) থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণেই’।

তিনি বলেন, আটকের পর মানসিক চাপ থেকেই তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। সুলতানা জেসমিনের মরদেহের ময়নাতদন্তের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে ফরেনসিক বিভাগের তিন সদস্য বৈঠকে বসেছিলেন। বোর্ড বসিয়ে তারা সেই রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন। তারপর এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা।

এর আগে গত রোববার বিকালে জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।

উল্লেখ্য, র‌্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২শে মার্চ সকালে নওগাঁ থেকে জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র‌্যাব এ অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল আমিন নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্ন জনকে। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।

এদিকে, আটকের পর ২৪শে মার্চ সকালে রাজশাহীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। জেসমিনের মৃত্যুর পর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের করা একটি মামলার কথা জানা যায়, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩শে মার্চ। জেসমিন ও তার কথিত সহযোগী আল আমিনকে এতে আসামি করা হয়। আল আমিনকে ২৬শে মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তিনি একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।