উপকূলের ১৯ জেলার মধ্যে ১০ জেলার ৮ লাখের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে নিজেদের বসতি থেকে সরিয়ে ঘুর্ণিঝড়কালীন আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। তাদের প্রায় ৮৭শতাংশই কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে। কারণ ঘুর্ণিঝড় মোখা এই দুই জেলার উপকূলে আঘাত করবে বলে পুর্বাভাস ছিল। দেশের ৭২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল এলাকার অন্য অনেক জেলায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। আবার কোথাও গত সন্ধ্যায় রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে সকালের আগেই বাড়ি ফিরে গেছে।এদিকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কক্সবাজার উপকূলের পাশ ঘেষে মিয়ানমারের উপকূলে চলে গেছে। এতে বিপদের ঝুকিঁ কেটে গেলেও জোয়ারের সময় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবাহাওয়া অধিদপ্তর।

গত দু’দিন ধরে চেষ্টা করে আজ দুপুর পর্যন্ত উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ ৮ লাখের বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে সরকারের ঘূর্ণিঝড়কালীন নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া সম্ভব হয়েছে। এরমধ্যে৭ লাখের বেশি শুধু কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের আশ্রয় কেন্দ্রে। এই দুই জেলার  মধ্যে সবচে ঝুঁকিতে কক্সবাজার  উপকুলের মানুষ। কারণ ঘুর্ণিঝড় মোখা এই পর্যটন জেলার উপকুলে মূল আঘাত হানার পূর্বাভাস ছিল।

সরকারি হিসাবে কক্সবাজার জেলায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র সাত’শ। সেগুলোতে দুপুর পর্যন্ত পর্যন্ত ২ লাখ ৩২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তবে আমাদের বৈশাখী টেলিভিশনের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নির্ধারিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক হোটেল, সরকারি কংক্রিটের উঁচু ভবনেওবহু ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কক্সবাজার উপকুলীয় এলাকায় সবচে ঝুঁকিতে সেন্টমার্টিনসহ কয়েকটি দ্বীপ ও চর। আমাদের কক্সবাজারের প্রতিবেদক নৌ-বাহিনীর সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৩৭টি নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আট হাজারের বেশি মানুষ আছে। কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন ও শাহপরী দ্বীপে বড় জলোচ্ছাসের আশংকা করা হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ইতিমধ্যে উত্তাল সাগরের পানির ঢেউয়ের উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়েছে।

কক্সবাজারে ১০ নম্বর ও চট্টগ্রামে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত শনিবার থেকে দেয়া আছে। এই দুই জেলায় সকাল থেকে হালকা বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে এবং বাতাসের জোড়ও ক্রমেই বাড়ছে।

সরকারি হিসেবে নোয়াখালী, ফেনী, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, বরগুনা ও চাঁদপুর জেলারও অনেক ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে পৌণে একলাখ মানুষ আছে। তবে আমাদের ভোলার প্রতিবেদক জানিয়েছেন ভিন্ন চিত্র। সেখানে, শনিবার সন্ধ্যা রাতে ৬১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৯ হাজার ১২ জন মানুষকে তাদের গবাদিপশুসহরাখা হয়। সারারাত ঝড়ের লক্ষণ না দেখায় ভোরের মধ্যে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রর সবাই নিজেদের বসতিতে চলে যায়। সাগরের কাছের জেলা বরগুনার চিত্রও একই।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকুলে কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি। কারণ ঘূর্ণিঝড় মোখায় সেদিকে দুর্যোগের বড় আশংকা দেখেছেন না স্থানীয়রা। সুন্দরবন এলাকা এই ঝড়ে শান্ত। সব দুশ্চিন্তা এবার এবার কক্সবাজারে।