২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩২তম এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল ও একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরীর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কাউটিংয়ের সেবার মন্ত্র ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে। স্কুলের পাশাপাশি মাদ্রাসার প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্কাউটিং প্রশিক্ষণ দেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি চাই প্রতিটি শিক্ষার্থী স্কাউটের প্রশিক্ষণের আওতায় আসুক।
গাজীপুরের মৌচাকে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩২ তম এশিয়া প্যাসিফিক ও একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরীর সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে দেশের স্কাউটদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ১০০ জন স্কাউট অংশ নেয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তাকে স্কাউট স্কার্ফ, ব্যাচ এবং ক্যাপ পরিয়ে দেন স্কাউট সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কাউট-ই নতুন প্রজন্মকে নৈতিক ও জীবনধর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। আর তরুণদের মধ্যে আধুনিক সৃজনশীল গুণাবলী বিকশিত হয়। ফলে স্কাউট সদস্যরা সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হচ্ছে ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলছে। পরোপকারী হিসেবে সমাজ সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে। প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিমারি করোনায় তাদের আন্তরিকতা আমরা দেখতে পেয়েছি। এই স্কাউট আন্দোলন আরও ব্যাপকভাবে গড়ে উঠুক।
শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই আমি তোমাদের মাঝে আসি, তখনই আমার মনে পড়ে আমার ছোট ভাই শেখ রাসেলকে, মাত্র ১০ বছরে যাকে ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিয়েছে। তোমাদের মাঝেই আমি শেখ রাসেলকে খুঁজে পাই। আমি চাই, আমাদের দেশের আজকের শিশু-কিশোরদের জীবন নিরাপদ হোক, সুন্দর হোক, অর্থবহ হোক।
জাম্বুরি হলো স্কাউট সদস্যদের মিলনমেলা। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অংশগ্রহণে চার বছর পরপর এই আয়োজন হয়ে থাকে। দেশ-বিদেশের ১০ হাজার ৯৯৬ জন স্কাউট, স্কাউট লিডার ও কর্মকর্তা এই জাম্বুরিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে স্কাউটদের সর্বোচ্চ পদক শাপলাকাব অ্যাওয়ার্ড দেন প্রধানমন্ত্রী। একইসাথে নয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।
মৌচাক জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ৩২তম এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল ও একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি ২০২৩। সারা দেশের ৯১৬টি স্কাউট ইউনিটের প্রায় ৮ সহস্রাধিক স্কাউট, কর্মকর্তা, আইএসটি রোভার স্বেচ্ছাসেবক, ইউনিট লিডার এবং বিভিন্ন দেশ হতে আগত স্কাউটারসহ ১০ হাজার ৯৯৬ জন এই জাম্বুরিতে অংশগ্রহণ করে।
১৯৭৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৪ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ফিলিপাইনে প্রথম এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্কাউট জাম্বুরি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ বিশ্ব স্কাউট সংস্থার ১০৫তম সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্যসংখ্যা ২২ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি। সংখ্যার বিচারে বাংলাদেশ স্কাউটসের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম।