বাংলাদেশের অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আইসিসি, জাতিসংঘ ও ইন্টারপোলের অভিযোগ দায়ের করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
নিউইয়র্কভিত্তিক অলাভজনক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান লুমেন কমিউনিট্যাটিস ইনকর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড পরিচালক মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে এই পিটিশন দাখিল করা হয়।
রোববার বিকেলে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে জুইশ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুল ধরেন পিটিশনকারিরা। তারা জানান, দীর্ঘ প্রস্তুতি ও তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের পর তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), জাতিসংঘ ও ইন্টারপোলে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন। এসব অভিযোগে ড. ইউনূস ও তার সরকারের দায়িত্বরতদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সহিংসতায় আঁতাত এবং সাংবিধানিক অন্তর্ঘাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
লুমেন কমিউনিট্যাটিস ইনকরপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড পরিচালক মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে গত ২১শে এপ্রিল এই পিটিশন দাখিল করা হয়। আইনি বিষয়গুলো সমন্বয়ের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন মাহফুজ হায়দার। তারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী মাহমুদুল হাসান জানান, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তৃত রূপরেখা আইসিসির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:-
ছাত্র বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক ও নারীদের টার্গেট করে হত্যা
গুম, নির্বিচারে আটক ও নির্যাতন
গর্ভবতী পুলিশ কর্মকর্তার হত্যাসহ রাষ্ট্র সমর্থিত যৌন সহিংসতা
হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং আহমদিয়া মুসলিমসহ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন
বাড়িঘর, সংবাদমাধ্যম ও আদালতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা
৭ শতাধিক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীকে গণহারে মুক্তি, চরমপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলা।
অভিযোগে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিয়মতান্ত্রিক দমন আইনি আবেদনে- রোম সংবিধির একাধিক অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে—এর মধ্যে গণহত্যা (অনুচ্ছেদ ৬), মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (অনুচ্ছেদ ৭), যুদ্ধাপরাধ (অনুচ্ছেদ ৮) এবং ব্যক্তিগত ফৌজদারি দায়বদ্ধতা (অনুচ্ছেদ ২৫) অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া জাতিসংঘ সনদেরও উল্লেখ রয়েছে, যেখানে সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। আবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, বিদেশি সহায়তার অপব্যবহার ও মতাদর্শগত অস্থিরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
আবেদনকারীরা ইন্টারপোলের কাছে ইউনুস ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ বা ডিফিউশন অ্যালার্ট জারির অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তদন্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালনের (আইসিসি) সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
