প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ বিরোধীরা সব সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশ যখন এগিয়ে যায় তখনই তাদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়। সেসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এদেশকে এগিয়ে নেয়া হবে বলে জানান তিনি। আজ (মঙ্গলবার) রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন দুর্যোগ ও সংকটকালীনে মানুষের পাশে থেকে আস্থা অর্জন করেছে পুলিশ বাহিনী। স্মার্ট পুলিশ নিয়ে গঠনে সরকার কাজ করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শীতের কুয়াশা ঢাকা সকালে স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা সমৃদ্ধ রাজারবাগ পুলিশ লাইন মাঠে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন ও বার্ষিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান পুলিশ প্রধান।খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে মঞ্চে দাঁড়িয়ে চৌকস পুলিশ সদস্যদের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পুলিশের এই বাৎসরিক পরিচালনা করেন পুলিশ সুপার কাজী মইন উদ্দিন।
পরে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা-সংগ্রামের আন্দোলনে পাকিস্তানিরা প্রথম রাজারবাগে আক্রমণ করেছিল। মুক্তি সংগ্রামে পুলিশ বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনীয় এই বাহিনী কার্যকর ভূমিকা রাখছে। পুলিশ বাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান সরকার প্রধান।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যায় তখনই একটি মহল নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করে, চক্রান্তে লিপ্ত হয়। দেশকে এগিয়ে নিয়ে আর প্রত্যয় জানাম তিনি। যে কোন অপতৎপরতা রোধে পুলিশকে আরো সতর্ক হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যের পর সম্মিলিত কুচকাওয়াজের মাধ্যমে শেষ হয় পুলিশ সপ্তাহের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাণ্ডব-অগ্নিসন্ত্রাসের ফলে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করে অগ্নি সন্ত্রাসের কারণে, যেখানে ২৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয় দগ্ধ হয়ে, আহত হয় আরও অনেকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিএনপি, জামায়াত-শিবিররা যেভাবে হত্যা করেছে প্রকাশ্যে দিবালোকে, এভাবে পুলিশের গায়ে কখনও কেউ হাত দেয়! তা কখনও দেখা যায় না। যদিও তা বাংলাদেশে ঘটেছে। এছাড়া সাড়ে ৩ হাজার বাস-ট্রাক, ১৯টি ট্রেন, ১১টি লঞ্চ পুড়িয়ে ধ্বংস করে। ৭০টি সরকারি ও ৬ ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়। সে সময় পুলিশের সদস্যরা জীবন বাজি রেখে এই রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে রুখে দিয়ে জনগণের নিরাপত্তা দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য হলো, অনেক পুলিশ সদস্য আগুনে দগ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন। বাংলাদেশে এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা যেন আর না ঘটে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের হাত থেকে আমরা দেশকে রক্ষা করেছি। জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদক প্রতিরোধেও পুলিশ ভূমিকা রাখছে। জনগণের পুলিশ হিসেবেই জনগণের সেবা দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশের ওপর জনগণের যে আস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ধরে রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক চক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ কখনও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে না। কোনো প্রতিবন্ধকতা যেন অগ্রযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, মন্দার ধাক্কা যেন না আসে, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।