প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে কোন কিছু অর্জন করা যায় না। কোন কিছু অর্জন করতে হলে জনগণের সমর্থন ও শক্তি লাগে। এসময় তিনি অগ্নিসন্ত্রাসীদের চেতনা ফিরে আসবে বলেও প্রত্যাশা করেন।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে সেনাবাহিনী আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন পাকিস্থানীরা যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতো দুর্ভাগ্য স্বাধীন দেশে সেভাবেই অগ্নি সন্ত্রাসীরা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে।

তিনি বলেন রাজনীতি মানুষের কল্যানের জন্য মানুষকে কষ্ট দেয়ার জন্য নয়। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ও জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কাজ করছে সরকার। নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারা ধরে রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পাকিস্তানি বাহিনীর মতো নাশকতাকারীরা অগ্নিসন্ত্রাস করছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী যেভাবে মানুষ পুড়িয়েছে, এখনও সেভাবে মানুষ ও যানবাহন পোড়ানো হচ্ছে। রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস বা জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। একাত্তর সালে দেখেছিলাম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিত। মানুষ বের হলে গুলি করে মেরে ফেলত। এরপর ২০১৩-১৪, আবার ইদানিং অগ্নিসন্ত্রাস শুরু হয়েছে।

pm-1

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে সেই পোড়া মানুষগুলো, তাদের পরিবার কী অবস্থায় আছে। এটা দুঃখজনক। এদের (অগ্নিসন্ত্রাসীদের) চেতনা হোক, সেটাই আমি চাই। অন্তত তাদের চেতনা ফিরে আসুক। এ সময় উন্নয়ন ধরে রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন সরকারপ্রধান।

বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা, সেজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করি।

স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য শান্তিকালীন কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শান্তিকালীন পদক দেওয়া হয়।

জনগণের শক্তি ছাড়া কোনো কিছু অর্জন করা যায় না: শেখ হাসিনা

এর আগে সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধানের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দুজনই শিখা অনির্বাণ চত্বরে রাখা পরিদর্শন বইয়ে সই করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১-এর ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। দিনটি প্রতি বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।