কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আবারও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। নাফ নদীর ওপারে টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে গত রাত থেকে থেমে থেমে ভেসে আসছে মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ।
রাত হলেই সীমান্তে বাড়ে আরাকান আর্মি-সরকারী বাহিনীর হামলা-পাল্টা হামলা। এরই জেরে সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। ওপারে বিস্ফোরণের শব্দে এপারের অর্ধশত বসতবাড়িতে দেখা দিয়েছে ফাটল। দেয়াল ও ছাদ ধসে পড়ার আশঙ্কায়। অনেকে ঘর ছেড়ে স্বজনদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে কাটান নির্ঘুম রাত।
টেকনাফ, উপজেলার পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপসহ নাফ নদীর মোহনা সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। সীমান্তের লোকজন বলছে, কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবার ও বড় ধরনের মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনা যাচ্ছে।
টেকনাফ নাইট্যংপাড়া বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে কিছুক্ষণ পর পরই ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। মনে হচ্ছে মর্টার শেলের আওয়াজ।
শাহপরীরদ্বীপ বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, মিয়ানমার থেকে ৫-১০ মিনিট পর পর মর্টার শেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল। গতকাল (শনিবার) রাত ৯টার দিকে আবার শুরু হয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে সারা রাত ঘুম হয়নি। এখনো না ঘুমিয়ে বসে আছি।
হ্নীলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে মর্টার শেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছে। সারা রাত থেমে থেমে বিকট শব্দ এসেছে। আমার বাড়ি থেকেও বিকট শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। বাহিনী দুটি জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিস্ফোরণের শব্দ অবশ্য টেকনাফবাসীর জন্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ দিন ধরেই দেশটিতে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। সবশেষ গত জুলাইয়ে টানা কয়েকদিন ধরে তীব্র সংঘর্ষ হয় মিয়ানারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর। মাঝে সংঘাত কমে আসায় সীমান্তের অধিবাসীরা কিছুটা স্বস্তিতেই ছিলেন। শনিবার রাত থেকে ফের নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তাদের মধ্যে।
