গেল কয়েকদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণ দিনযাপন কাটছে চরম উৎকণ্ঠায়। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী আরাকান আর্মিসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সাথে মিয়ানমার জান্তা সরকারের তুমুল সংঘর্ষ চলছে। সীমান্তের ক্যাম্প দখলে টানা গুলিবর্ষণ, মর্টার শেল নিক্ষেপসহ বিস্ফোরণের প্রভাব এসে পরে সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের গ্রামগুলোতেও।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী জলপাইতলী, বাজার পাড়ার এলাকার মানুষ এখন আতঙ্কে ঘরছাড়া। ফাঁকা পড়ে আছে তুমব্রু বাজার, বেতবুনিয়া বাজার এলাকার ৬টি স্কুল ও ১টি মাদ্রাসা। এছাড়া এই এলাকার ২৭টি পরিবার নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অব্যাহত গোলাগুলির কারণে সীমান্ত এলাকায় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে ঘুমধুমের তিনটি গ্রাম প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর ১৫৮ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে নিয়েছে। বিজিবি জানিয়েছে এ পর্যন্ত মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর ২৬৪ সদস্য বাংলাদেশে ঢুকেছে। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আটজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন। সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে জেলা প্রশাসক জানান, বান্দরবান ও কক্সবাজারের সীমান্তঘেষা গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘুমধুম এলাকার দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসাথে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ ও সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তার জন্য বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার রাতে ঘুমধুমের উত্তর ঘুমধুম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ ও ২নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমকুল, কোনারপাড়া, মধ্যমপাড়া, ভাজাবনিয়া ও তুমব্রু বাজার এলাকার ২৭ টি পরিবারের ১২০ জন  সদস্য।

রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তায় আজও সতর্ক অবস্থায় আছে বিজিবি ও আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।