অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত’র সেঞ্চুরিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচেশ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেট হারিয়ে আসরের শুভ সূচনা করে স্বাগতিকরা। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে২৫৫ রানে অলআউট হয় লঙ্কানরা। জবাবে, ব্যাট করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য সেঞ্চুরিতে৩২ বল হাতে রেখে সহজ জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাজমুল হোসের শান্ত।

শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। তবে শুরুটা ভালো করতে পারেননি টাইগার ওপেনাররা। ইনিংসের প্রথম বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন কুমার দাস। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে বাইশ গজে নামেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত।

শুরুর ধাক্কা সামাল দেবার আগেই দিলশান মাদুশঙ্কার দ্বিতীয় ওভারে ফেরেন আরেক ওপেনার সৌম্য। সাজঘরে যাবার আগে ৩ রান করেন তিনি। ফলে দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে বাংলাদেশ। এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন সম্প্রতি দারুণ ফর্মে থাকা তাওহীদ হৃদয়। তবে উইকেটে এসে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি তিনিও।

দলীয় ২৩ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। যাবার আগে ৮ বলে তিন রান করেন তিনি। দলের এমন বিপর্যয় অবস্থায় ব্যাট হাতে চতুর্থ উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শান্তকে সঙ্গে চাপ সামলিয়ে জুটি গড়েন রিয়াদ। এই দুই জনের ব্যাটে ৬৯ রান আসে চতুর্থ উইকেটে।

riyad_shanto

তবে দলীয় ৯২ রানে রিয়াদ আউট হলে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে যাবার আগে ৩৭ বলে ৩৭ রান করেন তিনি। এরপর পঞ্চম উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন মুশফিকুর রহিম। তাকে সঙ্গে নিয়ে দেখে শুনে খেলতে থাকেন শান্ত। আস্তে আস্তে থিতু হয়ে রানের চাকা সচল রাখনে দুই ব্যাটারই।

আর তাতে পঞ্চম বাংলাদেশী অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে শতকের দেখে পান শান্ত। অন্যদিকে মুশফিকও তুলে নেন অর্ধশতক। ফলে এই দুই জুটিতে জয়ের ভিত পেয়ে যায় টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত আর উইকেট না গেলে ৩২ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা। শ্রীলঙ্কার হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন দিলশান মাদুশঙ্কা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় শ্রীলঙ্কা। দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও আভিস্কা ফার্নান্দো খেলছিলেন হাত খুলে। যদিও পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ব্রেক থ্রু পেয়ে যায় বাংলাদেশ। তানজিম হাসান সাকিব নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে আভিস্কার উইকেট তুলে নেন।

অফ স্টাম্পের বাইরে বল ফেলছিলেন তানজিম। ব্যাটারকে খেলতে হচ্ছিল শরীর থেকে দূরে থেকে। এমন এক বলে আভিস্কার ব্যাট ছুয়ে সহজ ক্যাচ যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ বলে ৩৩ রান করেন আভিস্কা। তাকে ফিরিয়েই থামেননি তানজিম সাকিব, নিজের পরের দুই ওভারে আরও দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার শুরুর স্বস্তি উড়িয়ে দেন।

৫ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ বলে ৩৬ রান করে তানজিমকে পুল করতে যান নিশাঙ্কা। কিন্তু তার টাইমিংটা ঠিকঠাক হয়নি। তৃতীয় স্লিপের কাছাকাছি দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ যায়। তানজিমের তৃতীয় ওভারে ৫ বলে ৩ রান করা সাদিরা সামারাবিক্রমার দারুণ এক ক্যাচ নেন মুশফিক।  প্রথম স্পেলে ৫ ওভার করে কেবল ২২ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তানজিম।

১৩ রানের ভেতর তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। তাদের রানের গতিও কমে যায়। ৩৭ বলে ১৮ রান করা চারিথ আশালাঙ্কাকে বোল্ড করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে কুশল মেন্ডিস হাল ধরেন জেনিথ লিয়ানগের সঙ্গে। তাদের ৬৮ বলে ৬৯ রানের জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ।

তাসকিনের লেন্থ বল তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন কুশল মেন্ডিস। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৭৫ বলে ৫৯ রান করেন তিনি। যদিও আরেক প্রান্তে ঠিকই টিকে থাকেন জানিথ। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করলেও ইনিংসটা অবশ্য শেষ করে আসতে পারেননি। ৬৯ বলে ৬৭ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

এর আগেই ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও মাহেশ থিকসেনাকে ফিরিয়ে শেষদিকে শ্রীলঙ্কার বড় রান করে ফেলার শঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন। বাংলাদেশ যদিও ইনিংসটা শেষ করেছে অস্বস্তি নিয়েই। ৮ ওভার ৪ বলে ৪৪ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তানজিম, তিন উইকেট পাওয়া তাসকিন ১০ ওভারে ৬০ রান দেন, শরিফুলও তিনটি উইকেট নিয়েছেন।