মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম সেশনের সব আশঙ্কা, দুর্ভাবনা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি, ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে গড়েছেন ইতিহাস, দলকে নিয়ে গেছেন নিরাপদ অবস্থানে। জোড়া সেঞ্চুরিতে দিন শেষে ৮৫ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৭৭ রান করে বাংলাদেশ।

প্রথম সেশনটা মোটেও ভালো কাটেনি। স্কোরবোর্ডে ২৪ রান তুলতেই পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এমন কঠিন মুহূর্তে দলের ঢাল হয়ে দাঁড়ান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। শক্ত জুটিতে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের পথ দেখান দুজন। ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরিতে মুশফিক ১১৫ ও তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকানো ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে লিটন করেছেন ১৩৫ রান। ইতিহাসগড়া এ অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এসেছে ২৫৩ রান।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভার কাসুন রাজিথার ফুল লেন্থের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু, তাঁকে ফাঁকি দিয়ে গিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। শূন্যতেই শেষ হয়ে যায় তরুণ এ ওপেনারের ইনিংস। ছয় টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে চতুর্থবার শূন্যতে ফিরলেন জয়।

জয়ের ধাক্কা না সামলাতেই হতাশায় ডোবান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল। আসিথা ফার্নান্দোর বলে ফ্লিক করার চেষ্টা করেন তামিম। টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল লেগে যায় পয়েন্টে। দারুণ ক্যাচ নিয়ে তামিমকে শূন্যতে বিদায় করেন জয়াবিক্রমা।

দুই ওপেনারকে হারানোর চাপ সামলাতে পারেননি মুমিনুল হকও। প্রতিপক্ষকে উইকেট তুলে দিয়ে ৯ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর চাপের মধ্যেই নাজমুল হাসান শান্ত ও সাকিব আল হাসানকেও হারায় বাংলাদেশ।

স্কোরবোর্ডে ২৪ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়ে খুব বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে বিপদ কাটাতে প্রথম সেশনের বাকি সময় সামাল দেন মুশফিকুর রহিম।

প্রথম সেশনে মোট ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৫ রান তোলে বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথম ঘণ্টায় আসে ৩১ রান। বাকিটা আসে দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায়।

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে আজ সোমবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। এ টেস্টে বাংলাদেশের একাদশে দুই পরিবর্তন অনুমিতই ছিল। হয়েছেও তাই। দুই পরিবর্তন নিয়ে ঢাকা টেস্টের লড়াইয়ে নেমেছেন মুমিনুল হকের দল।

চট্টগ্রাম টেস্ট চলাকালীন চোটে ছিটকে যান শরিফুল ইসলাম। চোটের কারণে ছিটকে যান নাঈম হাসানও। এই দুজনের বদলে একাদশে এসেছেন দুজন।

একাদশে শরিফুলের বদলে সুযোগ পেয়েছেন পেসার ইবাদত হোসেন। আর নাঈমের বদলে কোনো বিশেষজ্ঞ অফ স্পিনার যুক্ত করা হয়নি দলে। একাদশে তাঁর জায়গায় দীর্ঘদিন পর ফিরেছেন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

রানের উইকেট চট্টগ্রামে ফল আসে কম। যার কারণে প্রথম টেস্টে দুই বিভাগে ভালো করেও মেলেনি জয়ের দেখা। সেই তুলনায় শেরেবাংলার হিসাব ভিন্ন। এ উইকেটে ফল আসার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, এ মাঠে আগের ২২ ম্যাচের ১৯টিতেই ফল এসেছে। আর, যে তিনটি ম্যাচে ড্র এসেছে তার সবগুলোতেই ছিল বৃষ্টির বাগড়া। তাই, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টে ফল নিজেদের পক্ষে আনার জন্যই লড়ছে দুদল।