যমুনা নদীর ওপর নির্মিত রেলসেতুর কয়েকটি পিলারে ফাটলের ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্বোধনের এক বছরের ব্যবধানে এমন ফাটল দেখা দেওয়ায় নির্মাণক্রটি এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে নানা মন্তব্য করা হচ্ছে ফেসবুকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে এমন অবস্থা হলেও যমুনা রেলসেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা ফাটল নয় বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট হেয়ারক্রাক বা চুল আকৃতি ফাঁকা।
যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী নাইমুল হক বলেন, রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তের ৮-১০টি পিলারের নিচের অংশে কিছু জায়গায় চুল আকৃতি ফাঁকা বা হেয়ার ক্র্যাক দৃশ্যমান হয়েছে। কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবি বড় করে তুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তিনি আরও বলেন, এটি কোনো ধরনের নির্মাণ ত্রুটি নয়, এমনকি ‘হানিকম্ব’ সমস্যাও নয়। প্রচণ্ড গরম ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কংক্রিটের নিচে শূন্য দশমিক এক থেকে তিন মিলিমিটার পর্যন্ত সূক্ষ্ম ফাঁকা তৈরি হয়েছে, যা সেতুর গঠন বা স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এসব হেয়ারক্র্যাক ধীরে ধীরে ঘষে মেরামত করা হচ্ছে। সেতুর কাঠামো বা ট্রেন চলাচলে কোনো ঝুঁকি নেই।

চলতি বছরের ১৮ মার্চ দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ রেল সেতুর উদ্বোধন করা হয়। এতে রেলপথের সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার এক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়।

সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ দিয়েছে সরকার। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে। এর আগে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এ সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।