যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে এবার আরও এক নতুন নিয়ম জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এ নিয়ম অনুযায়ী, হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ক্যান্সার, ডায়বেটিস, মেটাবলিক রোগ, স্নায়ুবিক রোগ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মতো রোগগুলোকে বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।

মূলত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে গেলে চিকিৎসা করালে সেখানে সরকারের খরচ হয়। এই খরচ কমাতেই রোগাক্রান্তদের ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এতে বলা হয়েছে, যারা রোগাক্রান্ত তারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে বসবাস শুরুর পর চিকিৎসা ব্যয় চালিয়ে নিতে পারবেন কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দূতাবাস এবং কনস্যুলেটে গাইডলাইন পাঠানো হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভিসা অফিসারদের এখন থেকে আবেদনকারীর স্বাস্থ্য ও বয়স সতর্কভাবে বিবেচনা করতে হবে। হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মানসিক রোগ, স্নায়বিক সমস্যা ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতাকে সম্ভাব্য উচ্চ খরচের রোগ হিসেবে দেখা হবে।

এছাড়া স্থূলতাকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার তালিকায় রাখা হয়েছে। কারণ এটি অ্যাজমা, স্লিপ অ্যাপনিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়সাপেক্ষ হতে পারে।

ভিসা অফিসারদেরকে আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারীর চিকিৎসা খরচ চালানোর মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য আছে কিনা, তা যাচাই করতে হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই নির্দেশনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাওয়া স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগা অসংখ্য ব্যক্তি বা বয়স্ক আবেদনকারীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এদিকে নতুন এই পদক্ষেপকে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী নীতিরই অংশ বলে সমালোচনা করেছেন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এটি ভিসা অফিসারদের স্বাস্থ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে যা চিকিৎসা-সংক্রান্ত জ্ঞান ছাড়াই তাদের ব্যক্তিগত ধারণা বা পক্ষপাতের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য করবে।

ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এ সিদ্ধান্ত উদ্বেগজনক, কারণ ভিসা অফিসাররা চিকিৎসক নন, তাদের এই বিষয়ে অভিজ্ঞতাও নেই। অথচ, তাদেরকে এখন অনুমান করতে বলা হচ্ছে কারও ভবিষ্যতে চিকিৎসা খরচ কত হতে পারে।