যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন স্টেটের সিয়াটল সিটিতে তীব্র গরমে গতকাল মঙ্গলবার দুই প্রবীণ নারীর মৃত্যু হয়েছে। এই সিটির তাপমাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে ১০৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটে উঠেছিল। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গত দুইদিন যত রোগী এসেছিলেন তাদের ১২% এরও অধিক প্রচন্ড তাপদাহের ছিল।
একই অবস্থা ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্ক অঞ্চল হয়ে কানাডা পর্যন্ত বিস্তৃত অর্থাৎ আবহাওয়ার হঠাৎ এ পরিবর্তনে জনজীবনে হতাশা নেমে এসেছে। আবহাওয়া দফতরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, তাপদাহের এই ভয়ংকর পরিস্থিতি আরও কিছুদিন ধরে চলবে। বিশেষ করে, যাদেরকে জীবিকার জন্যে ঘরের বাইরে যেতেই হচ্ছে এবং যাদের বাসায় বা গাড়িতে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র নেই, তাদের ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছেন গত কয়েকদিন থেকেই।
এদিকে, কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের একটি গ্রামে সেখানকার মানুষ বৈরী আবহাওয়ার চরম রূপ দেখেছে। ওই দিন সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ১১৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশটির ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ছাড়াও কানাডার মেরু অঞ্চল থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন, ওয়াশিংটন, নেভাদা, নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা পর্যন্ত তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের গড়ের তুলনায় বেশি রয়েছে। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেকটিকাট, পেনসিলভেনিয়ায় গতকাল মঙ্গলবারের তাপমাত্রা ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে বেশী।
ওরেগন স্টেটের বৃহত্তম শহর পোর্টল্যান্ডের তাপমাত্রা ছিল আরও বেশি। গত সোমবার সেখানে ১১৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস। তীব্র গরমের কারণে সেখানে অলিম্পিকের বাছাইপর্বের চূড়ান্ত দিনের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করে স্থানীয় সৈকতগুলোয় বাড়ছে মানুষের ভিড়।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অ্যালবার্টা, মেনিটোবা, নর্থওয়েস্ট টেরিটোরিসহ কানাডার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সপ্তাহজুড়ে ভয়াবহ তাবদাহ বয়ে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে এনভায়রনমেন্ট কানাডা। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় এলাকায় রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রার সতর্কতা জারি করেছে এনডাব্লিউএস। বলা হয়েছে, পুরো অঞ্চলে ‘হিট ডোম’ তৈরি হয়েছে, যা এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।