মানুষকে যে রোগগুলো বেশি ভোগায়, তার মধ্যে ক্যান্সার সবচেয়ে ভীতিকর। ক্যান্সার শরীরে একবার বাসা বেঁধে ফেললে রোগীকে বাঁচিয়ে ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। ক্যান্সার হয়ে গেলে আরও অনেক রোগ চেপে বসে শরীরে। তবে কেউ যদি প্রাথমিক পর্যায়েই এই মরণব্যাধি শনাক্ত করে ফেলতে পারে, তার বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানিই উজ্জ্বল থাকে।

ব্যথা হলো ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় উপসর্গ। কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের কোনো কোনো জায়গায় ব্যথা হতে পারে। সেই ব্যথা বাড়তে পারে ধীরে ধীরে। এরকম অবস্থায় পা থেকে মাথা, শরীরের সব স্থানেই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শরীরের কোথাও কোনো ব্যথা দেখা দিলে সতর্ক হোন।

কী ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তা বোঝা যাবে রোগীর ব্যথা অনুভব করার ওপর নির্ভর করে। শরীরের কোন জায়গায় ব্যথা করছে, সেই ব্যথা কতটা ছড়িয়ে পড়েছে, ব্যথার তীব্রতা দেখে তা বোঝা যায়। দীর্ঘস্থায়ী এবং তীব্র ক্যান্সারের ব্যথা সম্পর্কে বেশিরভাগই সচেতন থাকেন, তবে আরও কয়েক ধরনের ব্যথা আছে যেগুলো আমরা ভালো করে খেয়াল করি না। ক্যান্সারের ব্যথাকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জেনে নিন সেগুলো কী-

সোমাটিক: ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে এই ব্যথা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আক্রান্ত স্থান মোচড় দিয়ে ওঠে।

নিউরোপ্যাথিক: ক্যান্সার থেকে নার্ভের ক্ষতি হলে এই ধরনের ব্যথা হয়। অনেক সময় কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি বা সার্জারির পরেও এই রকম ব্যথা দেখা যায়। নিউরোপ্যাথিকে আক্রান্ত স্থানটা জ্বলে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়।

ভিসারাল: ভিসেরা বলতে বোঝায় শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে। যেমন- বুক, পেট বা পেলভিস। এসব জায়গায় যেকোনো ব্যথা হলে তাকে ভিসারাল পেইন বলা হয়। এতে আক্রান্ত স্থান থরথর করে কাঁপার মতো অনুভূতি হয়।

তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: সাধারণত আঘাতের কারণে স্বল্পমেয়াদী ব্যথা হয়। যার মানে এটা সময়ে সময়ে আসতে পারে এবং যেতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে।

ক্যান্সারের ব্যথার লক্ষণ:

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সারের ব্যথা নিস্তেজ, তীক্ষè এবং জ্বলন্ত হতে পারে। এই ব্যথা চলতে পারে একনাগাড়ে। ব্যথার তীব্রতা মাঝারি এবং গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ক্যান্সার কোনো কোষে বৃদ্ধি পেলে বা কোষকে ধ্বংস করে দিলে ব্যথা শুরু হয়। ব্যথা যদি তীক্ষè এবং অবিরাম হয় তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসককে ব্যথার তীব্রতা, ব্যথার অবস্থান, কী ধরনের ব্যথা হচ্ছে, ব্যথা বাড়ায় এমন কিছু আছে কি না সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে হবে।

ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। যেমন-

* চরম ক্লান্তি

* হঠাৎ রক্তপাত

* আচমকা ওজন হ্রাস

* ত্বকের পরিবর্তন

* চামড়া বা ত্বকে আচমকা গজিয়ে ওঠা মাংসপিন্ড।