বহুল আলোচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের নতুন তারিখ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সুত্রে জানা গেছে পূর্ব ঘোষিত রাকসু নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।রাকসু নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে এ নির্বাচন ২০ দিন পেছানো হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি জানান কয়েকটি প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আজ সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসের পরিবহন মার্কেটের আমতলায় সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।
ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন হল ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
তাসিন খান বলেন, রাকসু নির্বাচন উপলক্ষে আমরা সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচার চালাচ্ছিলাম। কিন্তু পোষ্য কোটাকে সামনে এনে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, সেখানে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবাই মুখোমুখি অবস্থানে আছেন। এটা কারও কাম্য নয়। রাকসু দিতে হবে, তবে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
তাসিন খান বলেন, পোষ্য কোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে শিক্ষার্থীরা বাসায় চলে যাচ্ছেন। ধর্মীয় উৎসব ও শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণে প্রচারণা ব্যাহত হচ্ছে। ৩৫ বছর পর হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচনকে এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুনুজ্জামান স্নিগ্ধ বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। পরিবহন মার্কেটের আমতলা শিক্ষার্থীদের প্রাণ। এখানে প্রার্থী ছাড়া ভোটার নেই। এভাবে তো ৩৫ বছর পর একটা রাকসু হতে পারে না।স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী শাহ পরাণ বলেন, প্রচারের কাজে হল ও মেসে গিয়েছি। সেখানে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী আছেন, বাকিরা চলে গেছেন।
‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী মারুফ বলেন, আমাদের ভোটাররা বাড়ি চলে গেছেন। অনেকেই যাবেন বলে চিন্তা করছেন। যদি এই শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে নির্বাচন কমিশন আনতে পারেন, তাহলে নির্বাচন হবে।
জানা যায় গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস ছিল উৎসবমুখর। তবে সেদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাতিল হওয়া পোষ্য কোটা ১০ শর্তে পুনর্বহাল করে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন।
গত শনিবার জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষক-কর্মকর্তারা পোষ্য কোটা পুনর্বহাল ও শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবিতে গতকাল রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। এখন তাঁরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে আছেন।