ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে ২০টি জেলার খসড়া হিসাবে ৬ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। আজ রোববার ঘূর্ণিঝড় রিমালের সার্বিক বিষয় নিয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
বুধবার (১২ জুন) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি বিষয়ে বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
সার্বিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে গতকাল (বুধবার (১১ জুন) একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছি ঘূর্ণিঝড়ের সব ক্ষতিকে একত্রিত করে প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেবো। আমি আজকের মধ্যে সারা দেশের সমস্ত মন্ত্রণালয়ের যে ক্ষতিটা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ রেডি করে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেবো।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রায় ৯০ ভাগ হিসাব পেয়ে গেছি। আজকে বাকিটা পেয়ে যাবো। ক্ষয়ক্ষতির হিসাবটা আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেবো, যাতে তিনি এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন। যাতে সব কাজগুলো প্রধানমন্ত্রী সঠিকভাবে করতে পারেন।’
৯০ শতাংশ ক্ষতি টাকার অঙ্কে কত— জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত আমার কাছে ৭ হাজার কোটি টাকার হিসাব এসেছে। এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বেড়িবাঁধের। উপকূলীয় মৎস্য সম্পদেরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। কোটি কোটি টাকার মাছের ঘেরগুলো নষ্ট হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে অসংখ্য বেড়িবাঁধ, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ঢাকায় সর্বোচ্চ আট মাত্রার ভূমিকম্পও হতে পারে বলেও এসময় আশঙ্কা প্রকাশ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘ভয়ের কারণ নেই। কারণ এমন পরিস্থিতি বহুদেশে আসছে। যেমন, তুরস্কে ভূমিকম্প হয়। কিন্তু তারা দুর্যোগ সহনীয় অবকাঠামো ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। কোনও কারণে সমস্যা এলে তা সমাধান করার সক্ষমতা তারা তৈরি করেছেন।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যদি কোনোরকম ভূমিকম্প হয়, সেজন্য শহুরে অঞ্চলে ব্যাপকভাবে স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করতে কাজ করছি। ভবনগুলো যদি ধসে যায়, তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করা ও মানুষকে উদ্ধারে আমরা ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’
ভবিষ্যতে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ রেখে যেতে চাইলে পুরো জাতিকে দুর্যোগের বিষয়ে সচেতন করতে হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে ভয়ের কারণ ভূমিকম্প। বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। যে কোনও আট মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এতে ঢাকা শহরের লাখ লাখ লোক আটকা পড়তে পারেন।’
আট মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার তথ্য কীসের ভিত্তিতে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলছেন, ‘নির্দিষ্ট গবেষণার ভিত্তিতেই আমি এমন কথা বলেছি। এ নিয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে।’