পুলিশ হামলা চালিয়ে মহাসমাবেশ বানচাল করে দেওয়ার অভিযোগে আগামীকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল তিনটার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই হরতালের ঘোষণা দেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মহাসমাবেশে হট্টগোল চলার সময় বিএনপি মহাসচিব এই ঘোষণা দেন।
মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজেও এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের পর এ হরতালের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
বিএনপির পাশাপাশি ১২ দলীয় জোট এই হরতাল পালন করবে। ১২ দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা জানান, এক দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের আগেই পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সারাদেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। দেশবাসী এই জালিম শাহীর বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করবে।
এর আগে, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দুপুর ২টা থেকে বিএনপির সমাবেশ শুরু হয়। তবে, তার আগেই রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা দুটি গাড়িতে এবং একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দেয়। সংঘর্ষটি কিছুটা বিস্তৃত হয়ে বিএনপির সমাবেশের কাছে চলে আসে এবং এক পর্যায়ে সমাবেশের কাছেই সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয় এবং পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বিএনপির সমাবেশের মাইকগুলো বন্ধ হয়ে যায়। পরে নয়াপল্টনের মঞ্চ থেকে হ্যান্ডমাইকে হরতালের ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির অভিযোগ, পুলিশের নারকীয়ভাবে নয়াপল্টনে তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করছে। এতে বহু নেতাকর্মী গুলিবৃদ্ধ হয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাজধানীর নয়াপল্টনে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর একই দিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ এবং শাপলা চত্বরে সমাবেশের ডাক দেয় জামায়াতে ইসলামী। একই দিনে তিন দলের সমাবেশ ঘিরে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ বলছে, সংবিধানে যেকোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক আন্দোলন, মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ নিরাপত্তাও দিয়ে থাকে। কিন্তু কর্মসূচির আড়ালে কেউ সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।